ফাইল ছবি।
আদানি গোষ্ঠীকে ঘিরে আরও দানা বাঁধল বিতর্ক। এ বার ভুয়ো সংস্থা খুলে বিদেশ থেকে ঘুরপথে আদানিদের সংস্থায় লগ্নির অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আরও বেশি করে উঠে এল গৌতম আদানির দাদা বিনোদের নাম। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে ইতিমধ্যেই যাঁর উল্লেখ রয়েছে। সেখানে অভিযোগ, বিদেশে আদানি গোষ্ঠীর যাবতীয় লেনদেন সামলাতেন আড়ালে থাকতে পছন্দ করা বিনোদই। তাঁর সংস্থার হাত ধরেই শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র নিয়ম এড়িয়ে ভুয়ো লেনদেনের মাধ্যমে টাকা ঢুকেছে ভারতে গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায়। এ বার অন্য এক রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থাটির টুইট, আদানির বিভিন্ন শেয়ারে লগ্নির বদলে রাশিয়ার ব্যাঙ্কের থেকে প্রায় ২৪ কোটি ডলারের বেশি (প্রায় ১৯৮০ কোটি টাকা) ঋণ নিয়েছেন বিনোদ। যা ভারতীয় কর্তৃপক্ষদের জানানো হয়নি। আদানিরা অবশ্য আগেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শনিবার ওই রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে লোকসভায় কংগ্রেসের সচেতক মণিকম ঠাকুরের প্রশ্ন, ‘‘আদানি নিয়ে কবে জবাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী?’’ এলআইসি এবং স্টেট ব্যাঙ্ককে আদানিদের শেয়ারে লগ্নিতে বাধ্য করা হয়েছে কি না, ফের সেই প্রশ্নও তুলেছে কংগ্রেস। রিপোর্টটিকে হাতিয়ার করে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যসভায় বিজেপি-র সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। টুইটে তাঁর ইঙ্গিত, ভারতকে অন্ধকারে রেখে রাশিয়া থেকে ওই ঋণ নেওয়ার ঘটনায় রয়েছে হর্ষদ মেহতার কেলেঙ্কারির ছায়া। অথচ ইডি, সিবিআই ‘কুম্ভকর্ণের মতো নিদ্রা গিয়েছে’, কটাক্ষ তাঁর।
সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠী নিয়ে শেয়ার সংক্রান্ত মার্কিন গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গের প্রকাশিত রিপোর্টে ৫০ বারের বেশি রয়েছে গৌতম আদানি নাম। সেখানেই বিনোদের কথা রয়েছে ১৫১ বার। তাঁর হাত ধরেই যে বিদেশে লেনদেন চলত সে কথাও জানানো হয়েছে। আর এ বার অন্য একটি রিপোর্ট বলছে, হোলসিমের ভারতীয় ব্যবসা কেনার ক্ষেত্রে সরাসরি ভূমিকা রয়েছে বিনোদের সংস্থার। যিনি শুধু আদানিদের ব্যবসার সঙ্গে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িতই নন, হুরুনের সমীক্ষা অনুসারে অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যে ধনীতমও। এ ছাড়াও আদানিদের বেশ কয়েকটি সংস্থার ক্ষেত্রে ঘুরপথে টাকা জোগাড়ের ব্যবস্থা করেছেন বিনোদ। যার হাত ধরে বাধ্যতামূলক ভাবে ২৫% শেয়ার প্রোমোটারদের বাইরের লগ্নিকারীদের হাতে থাকার নিয়ম এড়াতে পেরেছে আদানিরা। এমনকি অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময়ে বিনোদই যে বিদেশে লেনদেনের মূল মাথা, সে কথা জানিয়েছেন সে দেশের এক বিশ্লেষক। সংশ্লিষ্টড মহলের একাংশের মতে, আদানিদের সংস্থাগুলিতে গরমিলের রিপোর্টের মধ্যেই এই অভিযোগ বিষয়টিতে নতুন বিতর্ক যোগ করল।