দিল্লিতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দফতরের সামনে নোট জমার লাইন। —নিজস্ব চিত্র।
সারা দেশে স্কুলের শিশুদের মিড-ডে মিলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বছরে যে টাকা খরচ করে, নোটবন্দির পরে ২০০০ টাকার নোট ছাপাতে তার থেকে বেশি খরচ হয়েছে। এখন সেই নোটই তুলে নেওয়া হচ্ছে বাজার থেকে।
২০১৬ সালের নভেম্বরে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরে বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে তড়িঘড়ি ২০০০ টাকার নোট ছাড়া হয়। আজ অর্থ মন্ত্রক লোকসভায় প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, ওই নোট ছাপাতে মোট ১৭,৬৮৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সেই সময় সমস্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে নোট রাখার ট্রে-ও বদলাতে হয়েছিল। এ নিয়ে তৃণমূলের দীপক অধিকারী (দেব) ও কংগ্রেসের অ্যান্টো অ্যান্টনির প্রশ্নের উত্তরে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, এর পিছনে খরচ হয়েছিল মোট ৩২.২০ কোটি টাকা। ১২.৭৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল শুধু স্টেট ব্যাঙ্কেরই। যার অর্থ, নোট ছাপানো এবং এটিএমে রদবদলের জন্য খরচ হয়েছিল ১৭,৭০০ কোটি টাকার বেশি। বিরোধীরা বলছেন, কেন্দ্র মিড-ডে মিলের জন্য বছরে ১২,০০০ কোটি টাকা খরচ করে। দু’হাজারি নোট ছাপাতে তার থেকেও বেশি টাকা খরচ করে এখন তা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, পরিষ্কার নোট চালু রাখার নীতি মেনেই এই এই পদক্ষেপ। ২০০০ টাকার নোটের ৮৯ শতাংশই ২০১৭ সালের মার্চের মধ্যে বাজারে এসেছে। অধিকাংশেরই চার থেকে পাঁচ বছরের আয়ু শেষ হয়েছে।
ব্যাঙ্কে ২০০০ টাকার নোট বদলের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এখন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কে নোট জমার লাইন পড়ছে। অনেক মহিলা এসে বলছেন, তাঁরা আলমারিতে গুঁজে রাখা নোট এখন খুঁজে পেয়েছেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসাব, ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের মধ্যে ৭.৪০ লক্ষ কোটি টাকার গোলাপি নোট বাজারে ছাড়া হয়েছিল। মে মাসে নোট ফেরতের সিদ্ধান্তের সময় বাজারে ছিল ৩.৫৬ লক্ষ কোটি টাকার ওই নোট। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ৩.৪৬ লক্ষ কোটি টাকার নোট জমা পড়েছে। এখনও ৯৭৬০ কোটি টাকার নোট রয়েছে বাজারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কে গিয়ে তা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে।