Market Price

মূল্যবৃদ্ধির হিসাবে খাবারের ভাগ কমছে, ক্ষুব্ধ কংগ্রেস

এখন খাদ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জ্বালানির মতো নানা পণ্যের বাজারদর হিসেব করে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হিসেব কষা হয়। ঝুড়িতে খাদ্য-পানীয়ের ভাগ থাকে প্রায় ৪৫.৮৬%।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৪ ০৪:৫০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

এ যেন সমস্যার সমাধান না করে তার থেকে চোখ বুজে থাকার কৌশল!

Advertisement

মূল্যবৃদ্ধিকে লাগাম পরাতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছে মোদী সরকার। অন্যান্য পণ্যের দামকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলেও খাদ্যপণ্যের দরে কিছুতেই রাশ টানা যাচ্ছে না। এই সমস্যার সমাধানে এখন খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হিসেব কষার সময় খাদ্যপণ্যকে বিশেষ ধর্তব্যের মধ্যে আনতে চাইছে না কেন্দ্র। যার অর্থ, এখন যে সব পণ্যের দাম বাড়ার হিসাব দেখে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির অঙ্ক কষা হয়, তার মধ্যে খাদ্যসামগ্রীর গুরুত্ব কমিয়ে ফেলা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান মন্ত্রক এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।

এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের মোদী সরকারকে নিশানা করেছে কংগ্রেস। দলের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। নন-বায়োলজিকাল প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, কম করো। সরকারে তাঁর ভক্তদের সত্যি বলার ক্ষমতা নেই। তাই তাঁরা বলছেন, এ তো খুবই সহজ! মূল্যবৃদ্ধির সংজ্ঞাই বদলে দেওয়া হবে। তা থেকে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

এখন খাদ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জ্বালানির মতো নানা পণ্যের বাজারদর হিসেব করে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হিসেব কষা হয়। ঝুড়িতে খাদ্য-পানীয়ের ভাগ থাকে প্রায় ৪৫.৮৬%। পরিসংখ্যান মন্ত্রকের মতে, এই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিই খুচরো বাজারের সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হারকে টেনে তুলছে। যেমন, জুনে খাদ্যপণ্যে তা ছিল প্রায় ১০%। তার ধাক্কায় সার্বিক হার মাত্রাছাড়া হয়ে ছাড়ায় ৫%। অথচ খাদ্য, জ্বালানি বাদ দিলে মূল্যবৃদ্ধি মাত্র ৩.১৫%। এই পরিস্থিতিতে পরিসংখ্যান মন্ত্রকের ভাবনা হল, মূল্যবৃদ্ধির অঙ্ক কষার সময় যে সমস্ত পণ্যকে হিসeবের ঝুড়িতে রাখা হয়, তার মধ্যে খাদ্য-পানীয়ের ভাগ ৪৫.৮৬% থেকে কমিয়ে ৩৭.৮৬% করে দেওয়া।

রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্য, খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে নামানো হবে। তার পরে কমানো হবে সুদের হার। কিন্তু বাজেটের আগে আর্থিক সমীক্ষা পেশ করে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরণ বলেছিলেন, ওই লক্ষ্য থেকে খাদ্যপণ্যকে বাদ দেওয়া উচিত। কারণ, সুদ কমিয়ে-বাড়িয়ে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। খাদ্যশস্যের ফলন, আবহাওয়া, খরা, অতিবৃষ্টির মতো বিষয়ের উপরে খাদ্যপণ্যের দামের ওঠানামা নির্ভর করে। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের মত ছিল, ভারতের মতো দেশে খাদ্যপণ্যের দাম কম রাখার কাজটাও শিকেয় তুলে রাখা সম্ভব নয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, পরিসংখ্যান মন্ত্রক এখন খাদ্যপণ্যকে অনেকখানি কম গুরুত্ব দিয়েই বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হিসেব কষতে চাইছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘কী অসাধারণ মোদীনমিক্স তাই না? না কি এটা দেশের মানুষের সঙ্গে নিষ্ঠুর পরিহাস?”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ঋণনীতি ঘোষণা করতে গিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছিলেন, মূল্যবৃদ্ধি হিসাবের জন্য কখনওই খাদ্যপণ্যকে বাদ দেওয়া যায় না। কিন্তু তার গুরুত্ব কমানো যায় কি না, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পরিসংখ্যান মন্ত্রক। শীর্ষ ব্যাঙ্ক আপাতত তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement