—প্রতীকী চিত্র।
সম্প্রতি লোকসভা ভোট চলাকালীন শেয়ারে লগ্নির পরামর্শ দিয়ে দেশ জুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দু’জনেরই ইঙ্গিত ছিল, ভোটের ফল দেখে দৌড়বে সূচক। তার আগে শেয়ার কিনে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। তবে তৃতীয় দফার মোদী সরকারের প্রথম আর্থিক সমীক্ষায় বার্তা এল কার্যত উল্টো। সেখানে বলা হল, সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীরা যে ভাবে শেয়ার বাজারে ভিড় করছেন, তাতে সাবধান হওয়া জরুরি। বিশেষত, বেশি রিটার্নের আশায় বাড়তে থাকা ‘ফাটকা’ লেনদেন উদ্বেগজনক। তা মানুষের ‘জুয়া খেলার’ প্রবৃত্তিকে তুলে ধরছে।
মোদী-শাহের শেয়ারে লগ্নির পরামর্শের পরে ভোটের ফল প্রকাশের আগের দিন (৩ জুন) সেনসেক্স ২৫০০ পয়েন্ট উঠেছিল ঠিকই। কিন্তু ফল প্রকাশের দিন (৪ জুন) বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পাওয়ায় পড়ে ৪৩০০-র বেশি। মুছে যায় ৩১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, সমীক্ষায় কি তাই সতর্কবার্তার লক্ষ্য মোদী-শাহ? তাঁদের কি ঘুরিয়ে বার্তা দেওয়া হল?
হালে সাধারণ লগ্নিকারীদের শেয়ার নিয়ে সতর্ক করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। নিয়ন্ত্রক সেবি বলেছে, যে ভাবে মূলত তরুণ প্রজন্ম পারিবারিক সঞ্চয়ের টাকা আগাম লেনদেনে ঢালছেন, তা বিপদ ডেকে আনছে। সেই প্রবণতা রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দিয়েছে তারা। সমীক্ষা বলেছে, বেশি রিটার্নের আশা, প্রযুক্তির প্রসার, ডিজিটাল লেনদেন ইত্যাদিতে ভর করে দেশের অগ্রগতিতে মূলধনী বাজারের জায়গা পোক্ত হচ্ছে। সূচকের উত্থানে স্পষ্ট ভূ-রাজনৈতিক দোলাচল, চড়া সুদ, মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সত্ত্বেও এগোচ্ছে অর্থনীতি। নথিভুক্ত শেয়ারের মোট মূল্য নজির গড়ে জিডিপি-র ১২৪%। কিন্তু বাস্তবে অর্থনীতির অগ্রগতির তুলনায় বাজার বেশি এগোলে সেটা অস্থিরতারই লক্ষণ।
অন্ধ ভাবে বাজার বা ফান্ডে লগ্নির পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের আগাম শেয়ার লেনদেন নিয়েও। বলা হয়েছে, এই ধরনের লেনদেন ‘জুয়া খেলার’ প্রবণতা তৈরি করে। কারণ, এতে বিপুল মুনাফার হাতছানি থাকে। অথচ সেখানে ক্ষতি হলে বিমুখ হন লগ্নিকারীরা। যা তাঁদের পাশাপাশি অর্থনীতির পক্ষেও খারাপ।
বিশেষজ্ঞ কমল পারেখ বলছেন, বাজার জল্পনায় ভর করে বাড়ছে। তাই সূচক ২৫% পড়লে ওই সমস্ত লগ্নিকারীর পক্ষে তা ধ্বংসাত্মক হতে পারে। বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর মত, ভারতে নগদ লেনদেনের ৪০০ গুণেরও বেশি আগাম লেনদেন হচ্ছে। ফলে ঝুঁকি বেড়েছে ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের।