প্রতীকী চিত্র।
ইঙ্গিত ছিলই। সেই মতো এ বছরের শেষে কলকাতার একাংশে গাড়ির জ্বালানি হিসেবে সিএনজি জোগানের পথে আরও এক ধাপ এগোল বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (বিজিসিএল)। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতা ও রাজারহাট-নিউটাউনের দু’টি পেট্রল পাম্পে সিএনজি-স্টেশন গড়ার জন্য যন্ত্রাংশ বসানোর কাজ শুরু করল তারা। রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগান নিয়ে চর্চা বহু দিনের। ২০০৫ সালে তা আনতে গেল-এর সঙ্গে আলোচনার কথা জানান তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয় বর্তমান প্রশাসনও।
উত্তরপ্রদেশ থেকে গেল-এর মূল পাইপলাইনের গ্যাস রাজ্যের নানা এলাকায় রান্না, গাড়ি ও কারখানায় জ্বালানি হিসেবে বণ্টনের জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে ছাড়পত্র দেয় সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক পিএনজিআরবি। কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে সেই বরাত পায় গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন। পরে গেল-এর সঙ্গে তাদের যৌথ সংস্থা বিজিসিএল-কে সেই অনুমোদন দেয় পিএনজিআরবি।
করোনায় বিজিসিএলের কাজ থমকে ছিল। মঙ্গলবার সংস্থার ডিরেক্টর রাজীব মাথুর, সিইও সত্যব্রত বৈরাগী, বিপণন-বাণিজ্য বিভাগের প্রধান পঙ্কজ কুমার বিশ্বাস প্রমুখের উপস্থিতিতে দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ায় ভারত পেট্রোলিয়ামের এক পাম্পে সিএনজি স্টেশনের যন্ত্রাংশ বসানো ও নির্মাণ কাজের সূচনা হয়।
আরও পড়ুন: চিনে ক্ষুব্ধ ভারত আগ্রহী তাইওয়ানে
আরও পড়ুন: চাহিদা কম হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ বেশি
আপাতত দুর্গাপুরের এসার এনার্জির ‘কোল বেড মিথেন’ গ্যাস কিনছে গেল। গেল-এর থেকে কিনে তা সিএনজি স্টেশনে জোগাবে বিজিসিএল। গেলের পাইপলাইন হলে তাতে আসা গ্যাসও জোগাবে তারাই।
গেলের গ্যাস
• ‘প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা গ্যাস’ প্রকল্পে উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুর থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগান দেবেগেল।
• জগদীশপুর-হলদিয়া-বোকারো-ধামড়া পর্যন্ত ২৬১০ কিলোমিটার ধরে সে জন্য মূল পাইপলাইন গড়ছে তারা।
• সংশ্লিষ্ট চার রাজ্যের (উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা) বিভিন্ন এলাকায় জ্বালানি হিসেবে সেই গ্যাস বণ্টনে আগ্রহী সরকারি–বেসরকারি নানা সংস্থা।
তার আগে
• গেলের ওই পাইপলাইন গড়তে আরও সময় লাগবে।
• তাই আপাতত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় গ্যাসের জোগান দিতে দুর্গাপুরের ‘কোল বেড মিথেন’ আনছে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (বিজিসিএল)।
শীঘ্রই কলকাতায়
• এই ডিসেম্বরে কলকাতার একাংশে সিএনজি (গাড়িরজ্বালানি) দেবে বিজিসিএল।
• সেই লক্ষ্যে দু’টি সিএনজি স্টেশনে যন্ত্রাংশ বসানোর কাজ শুরু হল মঙ্গলবার।
বিজিসিএলের পরিকল্পনা
• ২০১৯ সালে তৈরি হয় গেল ও গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাইয়ের যৌথ সংস্থা বিজিসিএল।
• বরাত পায় কলকাতার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়ার একাংশে প্রাকৃতিক গ্যাস বণ্টনের।
• মোট খরচ ৪৮৪৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে
১৫০ কোটি।
• বাড়িতে বা হোটেলে পাইপলাইনে (পিএনজি) জোগানো হবে, কল-কারখানায় ও গাড়িতে জ্বালানি
সংস্থাটির কর্তারা আশাবাদী, ডিসেম্বরেই ওই সিএনজি স্টেশন দু’টি চালু হবে। আর মার্চের মধ্যে হবে আটটি। তেল সংস্থার পাম্পের পাশাপাশি নিজস্ব সিএনজি স্টেশনও গড়তে চায় বিজিসিএল। সরকারি সূত্রের খবর, কসবা-সহ দু’তিনটি সরকারি বাস ডিপোতে সেই সুবিধা চালু করবে তারা। সংস্থা সূত্রে খবর, এ বছরের শেষে বা পরের বছরের শুরুতেই দক্ষিণ কলকাতা, রাজারহাট-নিউটাউন ও হুগলির কিছু আবাসনে পাইপলাইনে বাড়িতে রান্নার গ্যাস (পিএনজি) জোগানের পরিষেবাও শুরু হবে। আর গেল-এর মূল পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে পাঁচ বছরে ১৪ লক্ষ পরিবার পিএনজি সংযোগ পাবে এবং মোট ১৩০টি সিএনজি জোগানের স্টেশন হবে।