নির্মলা সীতারামন ও অমিত মিত্র
রাজ্যগুলিকে চমকে দিয়ে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ তাদের জন্য প্রায় ৩৫,০০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করল অর্থ মন্ত্রক।
অগস্ট থেকে রাজ্যগুলি জিএসটি ক্ষতিপূরণ পায়নি। তা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নাগাড়ে তোপ দেগেছেন বিরোধী শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। ১৮ ডিসেম্বর জিএসটি পরিষদের বৈঠক। তার দু’দিন আগে আচমকাই এ ভাবে ক্ষতিপূরণ মেটানো আসলে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের পাশে পাওয়ার চেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, ওই বৈঠকে জিএসটির হারে বড় রকমের রদবদল করতে চাইছে কেন্দ্র। অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে বাজারে কেনাকাটা ধাক্কা খাওয়ায় এই কর থেকে কমে যাওয়া আয় পুষিয়ে নিতে।
অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র আজই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখে এ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। চাল-গমের মতো খাদ্যশস্য, মাছ-মাংস, আনাজ,
ফলের মতো পণ্যে জিএসটি চাপানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়ে অমিতবাবুর
যুক্তি, গরিব মানুষের কথা ভেবে এ সব পণ্যে কর চাপানো হয়নি। এগুলি থেকে আয়ের সুযোগ কম। ডাল, আটা, তেল, চা, কফি, পাউরুটি, কয়লা, কেরোসিন, জীবনদায়ী ওষুধের মতো পণ্যে জিএসটি ৫% থেকে ৬% করার পরিকল্পনারও প্রতিবাদ করেছেন তিনি। তাঁর আপত্তি রয়েছে বিলাসবহুল পণ্যে সেস বাড়ানোর প্রস্তাবের। অমিতবাবুর দাবি, ‘‘অর্থনীতি কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছে। চাহিদা কমায় কারখানায় উৎপাদন কমছে। এখন গরিব মানুষের ব্যবহার্য পণ্যে জিএসটি বা বিলাসবহুল পণ্যে সেস বাড়ালে উল্টো ফল হবে।’’ একমত কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও। তবে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, এ নিয়ে রাজ্যগুলির মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে সেস থেকেও রোজগার কমেছে কেন্দ্রের। যে আয় থেকে জিএসটিতে রাজ্যগুলির রাজস্ব আয়ের ক্ষতি মেটানো হয়। আজ মন্ত্রক বলেছে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য মঞ্জুর করা হয়েছে ৩৫,২৯৮ কোটি টাকা।
জিএসটি থেকে আয় কমায় জিএসটি পরিষদ রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছিল। তার মধ্যে আরও পণ্যে জিএসটি চাপানো, কয়েকটিতে বাড়ানো ছাড়াও ছিল সেস বাড়ানোর কথা। অমিতবাবুর মতে, ‘‘এতে ইচ্ছেমতো জিএসটি-র উপরে সেস আদায়ের প্রবণতা বাড়বে।’’ তাঁর মতে, পরিষদকে দেখতে হবে, কী ভাবে শিল্পকে সুরাহা দেওয়া যায়। এ জন্য কর ব্যবস্থা আরও সরল করা জরুরি।