সঞ্জয় চন্দ্র। ছবি সংগৃহীত।
ইউনিটেকের অন্যতম প্রোমোটার তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় চন্দ্রের বিরুদ্ধে কানাড়া ব্যাঙ্কের ১৯৮ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করল সিবিআই। সঞ্জয় ছাড়াও তাঁর বাবা তথা ওই রিয়েল এস্টেট সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রমেশ চন্দ্র এবং তাঁর আর এক ছেলে অজয় চন্দ্রের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। রবিবার তাঁদের বাড়ি, অফিস-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে সিবিআই।
ইউনিটেকের বিরুদ্ধে চলতি বছরের নভেম্বরে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ করে কানাড়া ব্যাঙ্ক। ১৯৭১ থেকে ওই ব্য়াঙ্কের গ্রাহক ইউনিটেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট গ্যারান্টি দেখিয়ে বহু বার ঋণ নিলেও তা ফেরত দেয়নি সংস্থা।
নভেম্বরের এফআইআরে কানাড়া ব্যাঙ্কের অভিযোগ, “২৯,৮০০ গ্রাহকের কাছ থেকে যে ১ ,৪২৭০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল ইউনিটেক। তার মধ্যে সম্ভবত প্রায় ৫০৬৩.০৫ কোটি টাকা ৭৪টি নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ব্যবহারই করেনি সংস্থাটি।”
আরও পড়ুন: করোনার টিকার বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীকে নিয়ে তথ্য ‘জানে না’ কেন্দ্র
ইউনিটেকের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। কানাড়া ব্যাঙ্কের আরও অভিযোগ, “ছ’টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১৮০৫.৮৬ কোটি টাকা নিয়েছে ইউনিটেক। তার মধ্যে ৭৬৩ কোটি টাকা কোনও প্রকল্পে ব্যবহার করেনি তারা।” কানাড়া ব্যাঙ্কের মতে, বিশ্বাসভঙ্গের পাশাপাশি জনসাধারণের ১৯৮ কোটি টাকা অপব্যবহার করেছে ইউনিটেক।
কানাড়া ব্যাঙ্কের অভিযোগ ছাড়াও এর আগেই বিভিন্ন মামলায় ইউনিটেকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সিবিআই, দিল্লি পুলিশ এবং ইডি। টু-জি স্পেকট্রাম মামলাতেও তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন সঞ্জয় চন্দ্র। যদিও ওই মামলায় দায়রা আদালত থেকে ছাড় পেয়ে যান তিনি। তবে গ্রেটার নয়ডার একাধিক আবাসন প্রকল্পে প্রতারণার অভিযোগে ২০১৭-তে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ৪৩ মাস তিহাড় জেলে কাটানোর পর শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অন্তর্বর্তী জামিনে ছাড়া পান সঞ্জয়। তবে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই ফের নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশেই জ্বালানি যোগান দেবে এই বিমান, ফ্রান্সের থেকে কিনতে পারে ভারত
একাধিক মামলায় জড়িত ইউনিটেকের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে ভারত সরকারের কাছে রয়েছে। সংস্থার ফরেন্সিক অডিট করানো নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই ফরেন্সিক অডিটে ধরা পড়ে, ইতিমধ্যেই কোটি কোটি টাকা সরিয়ে ফেলেছে বা তার অপব্যবহার করেছে ইউনিটেক। ওই অডিটে জানা গিয়েছে, ২০১৭ থেকে ‘১০-এর মধ্যে সাইপ্রাসে ১,৭৪৫ কোটি টাকাও বেশি বিনিয়োগ করেছেন ইউনিটেক। ওই অডিট রিপোর্টের দাবি, রিয়েল এস্টেট সংস্থাটি ব্যাখ্যাতীত ভাবে বিনিয়োগ করেছে এবং অফশোর সংস্থায় বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে ফেলেছে।