প্রতীকী ছবি।
এক-দু’মাস নয়। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মেয়াদ ১১ মাস বাড়াল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আগে এক দফায় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এ বার হল ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। অথচ তাদের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ২০২০-র ১ এপ্রিল থেকে।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত, আগামী বাজেটের হিসেব কষতে এন কে সিংহের নেতৃত্বাধীন অর্থ কমিশন ৩০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পেশ করবে। কিন্তু তাতে শুধু ২০২০-২১ অর্থবর্ষের সুপারিশ থাকবে। তাদের দ্বিতীয় রিপোর্টের সুপারিশ হবে ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ সালের জন্য। অর্থাৎ ছ’বছরের সুপারিশ হবে দু দফায়। অতীতে তিন বার অর্থ কমিশনকে দু’ভাগে ভেঙে রিপোর্ট দিতে হয়েছে।
কেন্দ্রীয় করের কত টাকা কী ভাবে রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ হবে, তা ঠিক করে অর্থ কমিশন। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের প্রস্তাব মাফিক ওই করের ৪২% সব রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয়। রাজ্যগুলি চাইছে তা হোক ৫০%। কিন্তু কেন্দ্রের দাবি, তাদের বড় ভাগ দিতে গিয়ে কেন্দ্রের কোষাগারে প্রায় কিছুই থাকছে না। এই প্রেক্ষিতে আজ কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হল কেন?
সরকারি বিবৃতিতে দাবি, মেয়াদ বাড়ায় কমিশন সংস্কারের ফলে বিভিন্ন তুলনামূলক আর্থিক পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখতে পারবে। কিন্তু সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য থেকে ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়েছে। কিন্তু কমিশনের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিষয়ে সুপারিশ করার ক্ষমতা নেই। তাই তার কাজের শর্তে বদল দরকার।
চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সদস্য এম গোবিন্দ রাও যুক্তি দিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মীর বিভাজনের পরে কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি বাস্তবসম্মত। আজ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির অধ্যাপিকা লেখা চক্রবর্তীও একে বাস্তবসম্মত বলছেন। কারণ— এক, সুপারিশের আগে রাজ্যগুলিতে গিয়ে কথা বলা জরুরি। লোকসভা ভোটের জন্য যে কাজ শেষ হয়নি বলে দাবি কমিশনের। দুই, জম্মু-কাশ্মীর দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় কর ভাগের অঙ্ক বদলাবে। তিন, প্রতিরক্ষায় বিশেষ তহবিল তৈরির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে কমিশনকে। তাই সময় লাগবে। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, সংবিধানে রাষ্ট্রপতির কাছে এই ক্ষমতা রয়েছে। কমিশন চাইলে দু’টি রিপোর্টে ছয় বছরের সুপারিশ করতে পারে।