ফাইল চিত্র।
এর আগে ৫০,০০০ ছুঁয়েও নেমে এসেছিল সেনসেক্স। বুধবার আর নামল না। ইতিহাস গড়ে এই প্রথম দিনের শেষে দৌড় শেষ করল ৫০,০০০ পেরিয়ে। টানা তিন দিনে ঝুলিতে ভরল প্রায় ৪০০০ পয়েন্ট। লগ্নিকারীদের শেয়ার সম্পদ বাড়ল ১২.৩১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
বাজেটের পর থেকেই টানা চড়ছে শেয়ার বাজার। এ দিন ৪৫৮.০৩ পয়েন্ট এগিয়ে সেনসেক্স থামে ৫০,২৫৫.৭৫ অঙ্কে। তবে লেনদেনের মাঝেই ৭২৮.৬৭ ওঠার দৌলতে ৫০,৫২৬.৩৯ অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছিল সূচকটি। দিনের উচ্চতার নিরিখে যা আরও এক রেকর্ড। ১৪২.১০ পয়েন্ট উঠে নিফ্টি-রও নতুন শিখর ১৪,৭৮৯.৯৫। দিনের মাঝে উচ্চতা নজিরবিহীন ১৪,৮৬৮.৮৫।
২১ জানুয়ারি ৫০,০০০-এর গণ্ডি পেরিয়েও নেমেছিল সেনসেক্স। তার পরে বাজেটের আগে মুনাফা তোলার তাগিদে লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রির জেরে টানা ছ’দিনে হারায় ৩৫০৬ পয়েন্ট। কিন্তু সোমবার (বাজেটের দিন) এবং মঙ্গলবার ৩৫১১ পয়েন্ট উদ্ধার হয়। বুধবার নিয়ে উত্থান মোট ৩৯৬৯। এই উত্থান অবশ্য মূলত বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নির সৌজন্যে।
বাজেটে পরিকাঠামো এবং স্বাস্থ্য খাতে বিপুল বরাদ্দ বেড়েছে। সরকারি খরচ বাড়াতে বিলগ্নিকরণের দরজা হাট করেছে কেন্দ্র। তার পর থেকেই ফের ছুটছে বাজার। এমন উত্থানকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বাজেটে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি নীতি এবং প্রতিষেধক প্রয়োগের সাফল্য হিসেবেই দেখছেন ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের এমডি-সিইও কুলদীপ মাইতি।
যদিও লগ্নিকারীদের তেমন উৎসাহিত হওয়ার কারণ আছে বলে মনে করছেন না মূলধনী বাজার নিয়ে গবেষণা সংস্থা ভ্যালু রিসার্চের এমডি-সিইও ধীরেন্দ্র কুমার। বরং বলছেন, ‘‘কোনও সংস্থার শেয়ার বা ফান্ডে লগ্নি করলে প্রত্যেককে সেগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া উচিত। শুধু সূচকের এমন উত্থানের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হতে পারে।’’
বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রধান অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যালের আশঙ্কা, আগামী দিনে বাজার অস্থির থাকবে। তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি অতিমারি যুঝতে তাদের অর্থনীতিতে বিপুল নগদ জোগানের ব্যবস্থা করেছে। ফলে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির হাতে লগ্নিযোগ্য তহবিল ফুলেফেঁপে উঠেছে। যার বড় অংশ ভারতের মতো সম্ভাবনাময় অর্থনীতির শেয়ার বাজারকে ঠেলে তুলছে।
বজাজ অ্যালায়্যাঞ্জ লাইফের প্রধান লগ্নি আধিকারিক সম্পত রেড্ডির মতে, শেয়ার বাজার বিভিন্ন সংস্থায় এবং আর্থিক ব্যবস্থায় করোনার প্রভাব সামলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। কিছু সংস্থাকে লোকসান থেকে বাঁচিয়েছে। বাজেট তো বটেই, তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বহু সংস্থার ভাল আর্থিক ফলও সূচকের উত্থানের জ্বালানি।