Bitcoin

মেটা-টেসলাকে হারিয়ে দিল বিটকয়েন, ক্রিপ্টো মুদ্রার দাপটে ফিকে রুপোও!

ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতেই হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে বিটকয়েনের দাম। বাজারি পুঁজির নিরিখে যা রুপোকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

দুনিয়া জুড়ে চলছে বিটকয়েনের দাদাগিরি। চকচকে ক্রিপ্টোকারেন্সিটির কাছে হার মেনেছে রুপোও। শুধু তাই নয়, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বিশ্বের অষ্টম শক্তিশালী সম্পদের জায়গা ছিনিয়ে নিয়েছে জনপ্রিয় এই ডিজিটাল মুদ্রা।

Advertisement

বর্তমানে একটি বিটকয়েনের মূল্য প্রায় ৯০ হাজার ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭৮.২৩ লক্ষ টাকা। আগামী তিন থেকে চার মাস ডিজিটাল মুদ্রাটিতে এই ‘ষাঁড়ের গতি’ বজায় থাকবে বলেই আগাম পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। চলতি বছরের ৫ নভেম্বর একটি বিটকয়েনের দাম ছিল ৬৮,৩১৭.৬৯ ডলার। কিন্তু তার পর থেকে ক্রমাগত দর বাড়তে বাড়তে ১২ নভেম্বর ৮৯,৩১৪.৬৯ ডলারে পৌঁছে যায়। অর্থাৎ মাত্র সাত দিনে ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দাম ৪২.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা প্রায় ২৬,৭৫৯ ডলার।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিটকয়েনের এ হেন মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বড় ভূমিকা রয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকাকে ডিজিটাল মুদ্রার হাব তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর তাই সরকারি ভাবে বিটকয়েন সংগ্রহের কথা বলেছেন তিনি। যার জেরে তিনি ভোটে জিততেই এই ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে।

Advertisement

এ বারের ভোটপ্রচারে ডিজিটাল মুদ্রাকে খোলাখুলি ভাবে সমর্থন করেছেন ট্রাম্প। ফলে বিটকয়েনকে ঘিরে আগ্রহ বাড়তে শুরু করে। গত ৩১ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে ‘মাইক্রো স্ট্র্যাটেজি’ নামে আমেরিকার একটি সফট্‌অয়্যার সংস্থা এই ক্রিপ্টো মুদ্রায় ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে বসে। সঙ্গে সঙ্গেই সংস্থাটির শেয়ারের দর এক লাফে ২৬ শতাংশ বেড়ে যায়। যার প্রভাবে দামি হতে শুরু করে বিটকয়েনও।

এ ভাবে হু হু করে দর বৃদ্ধির জেরে রুপোকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে জনপ্রিয় এই ডিজিটাল মুদ্রা। বর্তমান বিশ্বে রুপোর বাজারি পুঁজির (মার্কেট ক্যাপ) পরিমাণ ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। যাকে ছাপিয়ে বিটকয়েনের বাজারি পুঁজি ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ২০০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

মজার বিষয় হল বাজারি পুঁজির নিরিখে দুনিয়ার একাধিক বড় বড় সংস্থাকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে বিটকয়েন। সেই তালিকায় রয়েছে মেটা (১.৪৭ লক্ষ কোটি ডলার), টেসলা (১.১২ লক্ষ কোটি ডলার) এবং ওয়ারেন বাফেটের হ্যাথাওয়ে (এক লক্ষ কোটি ডলার)। বাজারি পুঁজির নিরিখে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সোনা। যা বর্তমানে প্রায় ১৮ লক্ষ কোটি ডলার। হলুদ ধাতুর পরেই রয়েছে এনভিডিয়া, অ্যাপল, মাইক্রোসফ্‌ট এবং গুগ্‌ল।

আমেরিকায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সাধারণ ভাবে বিটকয়েনের দাম বাড়তে দেখা যায়। ২০১২ সালে বারাক হুসেন ওবামার জেতার পর মাত্র ৯০ দিনে ক্রিপ্টো মুদ্রার দর ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১৬ সালে প্রথম বার ট্রাম্প ও ২০২০ সালে জো বাইডেন জেতার পর এতে যথাক্রমে ৪৪ ও ১৪৫ শতাংশের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল।

আমেরিকার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’-এর চেয়ারম্যান গ্যারি গেনস্লার অবশ্য বিটকয়েনের প্রবল বিরোধী। ফলে আগামী বছরের জানুয়ারিতে (পড়ুন ২০২৫ সাল) শপথগ্রহণের পর ট্রাম্প তাঁকে অপসারণ করতে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিন্যান্সশিয়াল’ নামের একটি নতুন ক্রিপ্টো ভেঞ্চার শুরু করেছেন এই রিপাবলিকান নেতা। কুর্সিতে বসে একে যে তিনি আরও সামনের দিকে নিয়ে যাবেন, তা বলাই বাহুল্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement