—প্রতীকী চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধির কবলে স্মার্ট-টিভির মতো ভোগ্যপণ্যের বাজারও। সমীক্ষা জানিয়েছে, চাহিদা কমায় বিক্রি কমেছে মোবাইলের মতো আধুনিক জীবনযাত্রার অন্যতম অঙ্গ হয়ে ওঠা এই পণ্যের। যা মূলত আমদানি করে ভারত।
উপদেষ্টা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের রিপোর্ট বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসে (জানুয়ারি-জুন) দেশে স্মার্ট-টিভির আমদানি কমেছে ৫%। কারণ, কমেছে বিক্রি। গোটা বছরে ৭% কমার আশঙ্কা। তবে গাড়ির মতোই দামি এবং বড় টিভির (৫৫ ইঞ্চি বা তার বড় পর্দার) চাহিদা বেড়েছে। জরুরি পণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে বহু মানুষের হাতে ভোগ্যপণ্য কিনতে বাড়তি পুঁজি না থাকা এর মূল কারণ বলে মনে করছে সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিনোদনের দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা বাড়ছে ‘ওটিটি’ পরিষেবার। কেব্ল টিভি-র বদলে নবীন প্রজন্ম তো সে দিকে ঝুঁকছেই, তাতে সড়গড় হচ্ছেন প্রবীণদের একাংশও। যে কারণে ‘এলসিডি’ বা ‘এলইডি’ টিভি বাজারে ভাগ বসায় স্মার্ট-টিভি। যেখানে টিভির অনুষ্ঠান ছাড়াও মোবাইলের বদলে ইউটিউব বা ওটিটি-তে সিরিয়াল, সিরিজ়, সিনেমা দেখা যায় অনেক বেশি আরামে। জোগান বাড়ায় তার দামও কিছুটা কমে। কিন্তু একাংশ বলছেন, অতিমারির আবহ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু হলেও তুলনায় কম দামি স্মার্ট টিভির চাহিদা কমে যাওয়া দেশের আর্থ-সামাজিক ছবির পুনরুজ্জীবন নিয়ে বার বার ওঠা প্রশ্নকেই ফের উস্কে দিল।
কাউন্টারপয়েন্টের হিসাবে, জানুয়ারি-জুনে দেশে আমদানি করা টিভির ৯১ শতাংশই স্মার্ট-টিভি। অনলাইনে বিকিয়েছে ৩৯%। আমদানি কমার প্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য, ‘‘চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বাধাই এর মূল কারণ। যা মানুষকে অত্যাবশ্যক পণ্য কেনায় সীমাবদ্ধ থাকতে বাধ্য করেছে।’’ তবে দামি স্মার্ট-টিভির চাহিদা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৮%। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সমাজের আর্থিক বৈষম্য নানা ক্ষেত্রে প্রকট হচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ দামি গাড়ি, বাড়ি বা ভোগ্যপণ্য কিনছেন দু’হাত ভরে। কিন্তু বড় অংশের হাতে নগদের জোগান কমায় অত্যাবশ্যক পণ্য বাদে কিছু কিনতে পারছেন না তাঁরা।
রিপোর্টে অবশ্য এটাও দাবি, অনেক সংস্থা এখন ভারতেই স্মার্ট-টিভি তৈরি করছে। অগ্রণী ব্র্যান্ডের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে লগ্নি করছে তাতে। উৎসবের মরসুমে বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় তার আমদানি বাড়বে বলে আশাবাদী উপদেষ্টা সংস্থাটি।