— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত ন’বছরে দেশের ২৪.৮২ কোটি মানুষ দারিদ্রের বৃত্তের বাইরে বার হয়ে আসতে পেরেছেন বলে দাবি করা হল নীতি আয়োগের গবেষণা রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনধারনের মানের নিরিখে জনসংখ্যা ও দারিদ্রের অনুপাত কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের মতো দরিদ্র রাজ্যগুলি উন্নতি করেছে সবচেয়ে বেশি। এই সময়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে তা ২১.২৯% থেকে নেমেছে ১১.৮৯ শতাংশে। দারিদ্র দূরীকরণের ক্ষেত্রে ২৯টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ত্রয়োদশ। তবে গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে দারিদ্রের ব্যবধান এখনও প্রকট।
রিপোর্ট প্রকাশের পরেই এই উন্নতির কৃতিত্ব নিতে মাঠে নেমেছে মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ লিখেছেন, ‘‘এই রিপোর্ট খুবই উৎসাহজনক। সকলকে নিয়ে অর্থনীতির অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমাদের দায়বদ্ধতা প্রমাণ করে। আমরা সার্বিক উন্নয়ন এবং প্রত্যেক ভারতবাসীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার ব্যাপারে আগামী দিনেও কাজ করে যাব।’’ বিরোধী শিবির অবশ্য আঙুল তুলছে সমাজে বাড়তে থাকা আর্থিক বৈষম্য, খাদ্য-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দাম এবং মাথা তোলা বেকারত্বের হারের দিকে। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, বহু মধ্যবিত্ত মানুষের হাতে পুঁজি কমেছে। দারিদ্রসীমার নীচে না নামলেও, বহু মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি আগের থেকে খারাপ হয়েছে। কমেছে আয় এবং সঞ্চয়, বেড়েছে খরচ।
সোমবার রিপোর্টটি প্রকাশ করে নীতি আয়োগ জানিয়েছে, শুধু আর্থিক পরিস্থিতি নয়; স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জীবনধারণের মানের মতো বিভিন্ন দিককে তুলে ধরে দারিদ্রের হিসাব কষা হয়েছে এই গবেষণায়। হিসাব কষার সময়ে এই তিনটি ক্ষেত্রকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আবার এই সমস্ত ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে পুষ্টি, নাবালক মৃত্যু, অন্তঃসত্ত্বার স্বাস্থ্য, বিদ্যালয় শিক্ষা, বিদ্যালয়ে উপস্থিতি, রান্নার জ্বালানি, শৌচাগার, পানীয় জল, বাড়ি, বিদ্যুৎ সংযোগ, সম্পত্তি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মতো ১২টি সূচক। ২০০৫-০৬ সাল থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের তথ্যের ভিত্তিতে রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে। তবে ২০০৫-০৬ থেকে ২০১৫-১৬ সাল এবং ২০১৯-২১ সালের পরে তথ্যে কিছু ঘাটতি থাকায় দারিদ্র দূরীকরণের ধারাবাহিক উন্নতির ভিত্তিতে এই সময়ের হিসাব কষা হয়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০১৯-২১ সালে দেশের শহরাঞ্চলে দারিদ্রের হার যেখানে ৫.২৭% ছিল সেখানে গ্রামাঞ্চলে তা ছিল ১৯.২৮%। অর্থাৎ, বৈষম্য স্পষ্ট।