— ফাইল চিত্র
ঘাড়ে প্রায় ৬৮,০০০ কোটি টাকা দেনার বোঝা। লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে গত কয়েক মাসেও। সংস্থা বিক্রি করতে মরিয়া সরকার। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও এয়ার ইন্ডিয়াকে (এআই) ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটির শীর্ষকর্তারা। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, সংস্থা বেসরকারি হাতে গেলেও প্রতিযোগিতা থামবে না। বরং বাড়বে পেশাদারিত্বের সঙ্গে টিকে থাকার লড়াই। তার প্রস্তুতি এখনই শুরু করা যাবে না কেন! যে কারণে প্রয়োজনে কঠোর হতেও পিছপা নন তাঁরা।
যেমন, এয়ার ইন্ডিয়ার কমার্শিয়াল ডিরেক্টর পদে এসেছেন মীনাক্ষী মালিক। যিনি দীর্ঘদিন কলকাতায় কাজ করেছেন। সম্প্রতি চিঠিতে উচ্চপদস্থ কর্তাদের তাঁর নির্দেশ, যাত্রী সংখ্যা বাড়াতে হবে। সময়ে বিমান ছাড়তে হবে। এআই-এর ওয়েবসাইট থেকে টিকিট বিক্রি বাড়াতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি লক্ষ্যমাত্রা ও সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন। বলা হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বার্ষিক কাজের মূল্যায়নে প্রভাব পড়বে।
সূত্রের খবর, দেশে এখন বিমানে ৭০%-৭৫% যাত্রী হচ্ছে। নতুন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সেটাকে ৮০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মীনাক্ষী। পাশাপাশি, এখন সময়মতো প্রায় ৯২% বিমান ছাড়ে। তা বাড়িয়ে ৯৮% করতে বলা হয়েছে। সংস্থার একটি সূত্রের দাবি, কলকাতায় ইতিমধ্যেই তা ১০০% ছুঁয়েছে। সেই সঙ্গে সংস্থার নিজের সাইট থেকে টিকিট বিক্রিও ২৪% থেকে ৩০% করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ সব ক্ষেত্রেই দায়ভার চাপানো হয়েছে সংস্থার এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর ও জেনারেল ম্যানেজার স্তরের কর্তাদের উপরে। লক্ষ্যমাত্রা পুরণ করতে বলা হয়েছে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে।
এআইয়ের একটি সূত্রের অবশ্য মত, এই সমস্ত সিদ্ধান্তকে সংস্থা ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর অন্যতম প্রচেষ্টা বলে দাবি করা হলেও, এই নির্দেশ কর্মী ছাঁটাইয়ের একটি পন্থা হতে পারে। কারণ, সংস্থাকে বিক্রি করার আগে তার দায়ভার কমাতে চায় সরকার। ইতিমধ্যেই প্রত্যেক কর্মীর কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ছাঁটাইয়ের নোটিস পড়েছে। বেশ কিছু পাইলটকে বসিয়েও দেওয়া হয়েছে। এ বার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ কর্তাদের উপরেও সম্ভবত আঁচ আসতে চলেছে। ফলে এখনই উৎসাহী হতে নারাজ তাঁরা।