প্রতীকী ছবি।
টানা লকডাউন কোমর ভেঙেছে অনেকের। দেশে তো বিক্রি মার খেয়েছেই। ইউরোপ, আমেরিকায় রফতানির বহু বরাত বাতিল হওয়াতেও লোকসানে বহু পোশাক তৈরির সংস্থা। উৎসবের মরসুমে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টায় তারা। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বস্ত্র শিল্পের সম্ভাবনার কথাই মনে করাচ্ছেন আন্তর্জাতিক পোশাক সংস্থার কর্তারা। তবে তাঁদের সতর্কবার্তা, সরকারি নীতির অপেক্ষায় থাকলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে হলে জোর দিতে হবে সময়োপযোগী পরিকল্পনায়, সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপে, সূতি ছাড়াও সিন্থেটিক, পলিয়েস্টার, রেয়নের মতো পোশাক তৈরিতেও।
বণিকসভা সিআইআইয়ের এক ওয়েবিনারে সম্প্রতি জার্মানি, ফ্রান্সের বিভিন্ন পোশাক সংস্থার কর্তাদের দাবি, ইউরোপ ও আমেরিকার বহু সংস্থা এখন চিনের বদলে অন্য দেশ থেকে পণ্য কিনতে চাইছে।
ফলে বস্ত্র শিল্পে ভারতের যে সম্পদ রয়েছে, তা-ই তুরুপের তাস হতে পারে। জার্মানির মেলাওয়্যার-এর এমডি হেনিং সাইডেনটপের মতে, তৈরি পোশাকের জোগানে ঘাটতি রয়েছে বহু। রফতানির সেই বাজার ধরার কাঁচামাল থেকে মানবসম্পদ, সবই ভারতে মজুত। চাই শুধু সঠিক পরিকল্পনা।
কেন্দ্রের ভাবনা
• নতুন জাতীয় বস্ত্র নীতি।
• প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নিতে অগ্রাধিকার।
ভারতের সুবিধা
• উৎপাদন পরিকাঠামো, কাঁচামাল ও মানবসম্পদ।
• উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক (আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ) বাজার।
• ইউরোপ ও আমেরিকার বহু সংস্থা যারা চিন থেকে পোশাক আমদানি করত, তারা এখন বিকল্প খুঁজছে।
পিছিয়ে যেখানে
• বস্ত্র শিল্পের উৎপাদনে নতুন লগ্নির ঘাটতি।
• সূতি বস্ত্রে নির্ভরশীলতা, যেখানে বিশ্ব বাজারে সিন্থেটিক, রেয়নের কদর বাড়ছে।
ইউরোপীয় পোশাক বহুজাতিক কারিবানের কর্তা মাতেও বরি বলেন, এ দেশের বড় পুঁজি তরুণ ও শিক্ষিত মানবসম্পদ। তবে ফ্রান্সের এম টু সোর্সিং-এর কর্তা মার্ক মোলের মতে, প্রতিযোগিতায় যুঝতে পণ্যের দাম, বৈচিত্র্য ও মানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বস্ত্র শিল্পের পরামর্শদাতা টেকনোপ্যাক অ্যাডভাইজ়ার্সের চেয়ারম্যান অরবিন্দ সিঙ্ঘলের দাবি, পরিকল্পনা করে এগোতে প্রয়োজন আরও লগ্নি, দক্ষ কর্মী ও নতুন উদ্যোগপতি। তবে বস্ত্র রফতানিতে চিনের বিকল্প হতে বেশি উৎপাদন ও পণ্যে বৈচিত্র্যে আনতে হবে।