প্রতীকী ছবি।
সামান্য হলেও, ফের ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাসে কাঁচি চালাচ্ছে একের পর এক আর্থিক, মূল্যায়ন ও উপদেষ্টা সংস্থা। মূল্যায়ন সংস্থা কেয়ার রেটিংস এক মাসের মধ্যে দু’বার পূর্বাভাস ছেঁটেছে। একই পথে হেঁটেছে গোল্ডম্যান স্যাক্সের মতো উপদেষ্টা বহুজাতিক। শুক্রবার এসবিআই রিসার্চ এবং মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংসও চলতি অর্থবর্ষে (২০২১-২২) বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল। সেই ছাঁটাই অবশ্য বাকিদের মতোই অল্প। তবে তাতে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়াতে দেরি হওয়া বার্তা স্পষ্ট। যা এ প্রশ্নও তুলে দিল, আগামী দিনে পূর্বাভাস আরও কমতে পারে কি না। তার উপরে অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে এসবিআই রিসার্চের রিপোর্ট জানিয়েছে, কেন্দ্র ঋণের নানা সুবিধা এনে আর্থিক কর্মকাণ্ডকে ছন্দে ফেরাতে চেষ্টা করলেও গত অর্থবর্ষে (২০২০-২১) ব্যাঙ্ক ঋণের বৃদ্ধি হয়েছে ৫.৫৬%। যা গত ৫৯ বছরের মধ্যে সব থেকে কম। তবে করোনার আগে থেকেই অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে তা কমতে শুরু করেছিল।
এ দিন ইন্ডিয়া রেটিংসের ইঙ্গিত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং প্রতিষেধক প্রয়োগের শ্লথ গতি দেখেই তারা পূর্বাভাস কমাতে বাধ্য হয়েছে। যে ঢেউয়ের ভয়াল রূপ ও তাকে যুঝতে প্রতিষেধক, অক্সিজেন, হাসপাতালের শয্যার মতো পরিকাঠামোর অভাব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। ইন্ডিয়া রেটিংসের মতে, প্রতিষেধকের উৎপাদন এবং তা কত দ্রুত গতিতে বেশিরভাগ দেশবাসীকে দেওয়া যাচ্ছে, এই দুই শর্ত অতিমারির পাশাপাশি বৃদ্ধির গতিকেও নিয়ন্ত্রণ করবে।
স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষেরও দাবি, ১৯১৮ সালে অতিমারি স্প্যানিশ ফ্লুয়ের পরবর্তী ঢেউগুলিতেই বেশি মৃত্যু হয়েছিল। ফলে প্রতিষেধকই এখন পাখির চোখ হওয়া উচিত। তবে তাঁর হুঁশিয়ারি, ভারতে ইঞ্জেকশন এবং সংক্রমণের অনুপাত হালে দ্রুত হারে বাড়লেও, তা এখনও পর্যন্ত জনসংখ্যার মাত্র ১.২%। যা ইজ়রায়েল, চিলি, ব্রিটেনের থেকেও কম।
তবে এই মুহূর্তে বৃদ্ধির থেকেও মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা তোলা অর্থনীতিকে বেশি ভাবাচ্ছে বলে মত ইন্ডিয়া রেটিংসের। তাদের মতে, এর কারণ দেশবাসীর আয় বাড়ার ফলে হাতে বাড়তি খরচের টাকা আসা নয়। ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় বেশিরভাগ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমতে বসেছে। যা উল্টে চাহিদায় আঘাত হানবে। যার জেরে মার খেতে পারে শিল্পের লগ্নি। ব্যাহত হতে পারে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া।
এর আগে মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়াতে দেরি হতে পারে। কেয়ার রেটিংস বলেছে, সংক্রমণ হঠাৎ বাড়ায় চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি ১১%-১১.২% থেকে কমে ১০.২% হতে পারে। আর এক উপদেষ্টা সংস্থা রিফিনিটিভ-ইপসোসের সমীক্ষায় স্পষ্ট, ধাক্কা খেয়েছে শহরাঞ্চলের ক্রেতার আস্থা।