শালবনিতে জিন্দলদের প্রকল্পের মধ্যে থাকা জমির মাপজোক শুরু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের লগ্নি-প্রস্তাব আসার মাসখানেক আগেই শালবনিতে জিন্দলদের প্রকল্পের মধ্যে থাকা জমির মাপজোক শুরু হয়েছে। এই তথ্য জানিয়ে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জমি জরিপের কাজটি করেছে রাজ্যের ভূমি দফতর। তারা সবিস্তার রিপোর্ট পাঠিয়েছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, ভূমি দফতর মাপজোক করে দেখেছে, শিল্পের জন্য জিন্দলদের দেওয়া জমির প্রায় ৮০ শতাংশই ‘অব্যবহৃত’ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি মানছেন, ‘‘ওখানে অনেকটা জমি অব্যবহৃত রয়েছে। সব রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, স্পেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ইস্পাত কারখানা গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন সৌরভ।
মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, শিল্পের জন্য নেওয়া জমি ফেলে রাখা যাবে না। ক’মাস আগে শালবনিতে এসে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘জ্যোতিবাবুরা জমি দিয়ে পালিয়েছিলেন। তার পর কিছু হয়েছিল? জিন্দলদের কারখানা (সিমেন্ট) আমি এসে উদ্বোধন করেছিলাম। ওঁরা কিছু জমি ফেরত দিচ্ছেন। তাতে নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। বড় কারখানা তৈরি হবে।’’ তার পরেই জমি জরিপ করা হয়। এবং সব শেষে সৌরভের ঘোষণা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রকল্প এলাকায় তিন দিন ধরে জমি জরিপ করেছেন ভূমি দফতরের আধিকারিক, কর্মীরা। তার সবিস্তার রিপোর্টের সঙ্গে ‘অব্যবহৃত’ জমির মানচিত্রও পাঠানো হয়েছে শিল্পোন্নয়ন নিগমে। সাধারণত চাষজমির মাপজোক হয় আল ধরে। আল ছাড়া জমির সীমানা বোঝা কঠিন। কিন্তু পাঁচিল ঘেরা জিন্দল প্রকল্পের জমিতে আলের চিহ্ন মুছে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘প্রথমে প্রকল্পের বাইরের জমির আল ধরে আগে সীমানা চিহ্নিত হয়েছিল। সেই নিরিখে ভিতরের জমির মাপজোক হয়েছে।’’
প্রায় দেড় দশক আগে, বাম জমানায় শালবনিতে জিন্দল গোষ্ঠীকে ৪১০১.৯৭ একর জমি দেওয়া হয়েছিল। ভূমি দফতরের পর্যবেক্ষণ, এখনও পর্যন্ত তার ৮৪৯.০২ একরে তৈরি হয়েছে সিমেন্ট কারখানা। রঙের কারখানা গড়ার কাজও শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট জমির ২০.৭০% ‘ব্যবহৃত’ হয়েছে। বাকি ৩২৫২.৯৫ একর ‘অব্যবহৃত’ পড়ে। শতাংশের নিরিখে ৭৯.৩০। একাধিক মহলের অনুমান, ১৫০০ একর বা তার বেশি কিছু জমি হাতে রেখে বাকিটা ফিরিয়ে দিতে পারে জিন্দলরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ইস্পাত কারখানা গড়ার জন্য সৌরভকে ঠিক কতটা জমি দেবে রাজ্য, শীঘ্রই তা চূড়ান্ত হবে।