প্রতীকী চিত্র
কোভিডের মতো অতিমারি নিয়ে ভারত তথা পুরো বিশ্বই নাজেহাল পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে সদ্য। কিন্তু এরই মধ্যে চুপিসাড়ে বেড়ে চলেছে আর এক সম্ভাব্য মহামারী। স্থূলতা। গত বছরের শেষ দিকে অল ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন ওবেসিটি (এআইএএআরও)-র ১৬তম সম্মেলনে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এই বিষয়ে আলোচনা করতে জড়ো হয়েছিলেন বহু বিশিষ্ট চিকিৎসক।
বিভিন্ন আলোচনা সভায় নানা উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। শুধুই বেড়ে চলা স্থূলতা নিয়ে চিকিৎসকেরা চিন্তিত, তা নয়। তাঁদের মতে, এই মহামারির কারণে ঘরে ঘরে দেখা যাবে নানা রোগের উপদ্রব। যেমন, হাইপারটেনশন থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস বা বন্ধ্যত্বের মতো গুরুতর রোগ শরীরে বাসা বাঁধবে স্থূলতা অর্থাৎ ওবেসিটিতে আক্রান্ত মানুষের জীবনে।
শিশু ওবেসিটির চিকিৎসক ডাঃ প্রীতি ফাটালে বিশ্ব ওবেসিটি ফেডারেশনের সদস্য। এ বিষয়ে সাবধান করে তিনি বলেছেন, “বিশ্ব ওবেসিটি ফেডারেশনের তরফে জানানো হয়েছে যে এই মুহূর্তে সচেতনতা তৈরি না হলে আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ ওবেসিটির শিকার হবে।”
সমীক্ষা ও নানা পরিসংখ্যানে ভিত্তি করে তিনি আরও বলেছেন যে, “প্রতি বছর ছেলেদের মধ্যে অন্তত ১০০% ওবেসিটি বাড়ছে। মেয়েদের মধ্যে এই হার প্রায় ১২৫%। এর পরেও আরও চিন্তার বিষয় হল, ছোটদের মধ্যে এই বৃদ্ধির হার ৯.৭% যেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই হার প্রায় ৫.২%।”
ডাঃ ফাটালে আরও বলেন, “এই শিশুদের মধ্যে অন্তত ৭০% প্রাপ্ত বয়সেও এই ওবেসিটির বাহক হয়েই থেকে যায়। এতে যেমন নানা রোগ বাসা বাঁধে, তেমনই দেখা দেয় বন্ধ্যত্বের মতো গুরুতর সমস্যা।
দিল্লির চিকিৎসক অমিত গুপ্তের কথায়, “ এই সমস্যার একটাই সমাধান, রোজ শরীরচর্চা করা। তবেই এই ধারাকে মহামারী হওয়ার আগে আটকানো সম্ভব হবে। শুধু হাঁটলে হবে না। দৌড়ঝাঁপ না করলে একে ঠেকানো যাবে না।”
ডাঃ গুপ্ত-র মতে, “অ্যারোবিকস বা ওজন নিয়ে শরীরচর্চা ইত্যাদি কায়িক পরিশ্রমের কাজই একমাত্র বাঁচাতে পারে ওবেসিটির কবল থেকে। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন বার শরীরচর্চা করা উচিত”। তিনি আরও বলেন, “স্থূলতা আর গর্ভধারণ খুব দুশ্চিন্তাজনক যুগলবন্দি। অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন ওজন এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিকঠাক না থাকলে মা এবং সন্তান উভয়ের ক্ষেত্রে বিপদের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”