সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়
চলতি বছরেই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চালু হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ (NEP 2020)। নতুন এই শিক্ষানীতির হাত ধরে স্নাতকস্তরে চার বছরের পাঠক্রমও শুরু হচ্ছে। এ বার থেকে অনার্স ডিগ্রি পেতে পড়াশোনা করতে হবে চার বছর। নতুন শিক্ষানীতি হবে ক্রেডিট পয়েন্ট নির্ভর। প্রতি বছরের শেষে পড়ুয়াদের পাওয়া ক্রেডিট পয়েন্ট একটা ক্রেডিট ব্যাঙ্কে জমা হবে। ফলে কোনও পড়ুয়া মাঝপথে লেখাপড়া ছাড়তে বাধ্য হলেও, পরে ফিরে এসে আগের কোর্সে পড়াশোনা চালু করার সুযোগ থাকছে। এই ক্রেডিট পয়েন্ট নির্ভর ব্যবস্থায় কোর্সের মাঝপথে এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার সুবিধেও থাকছে। সেই সঙ্গেই নতুন শিক্ষানীতি এ দেশে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি’ হিসেবে ঢেলে সাজাতে চাইছে।
নতুন এই ব্যবস্থায়, প্রথম বছরের পড়াশোনা শেষ করলে মিলবে সার্টিফিকেট। দ্বিতীয় বছরের শেষে প্রাপ্য ডিপ্লোমা। তৃতীয় বর্ষের শেষে স্নাতক ডিগ্রি। চার বছরের কোর্স শেষ করলে অনার্স ডিগ্রি পাওয়ার পাশাপাশি সরাসরি গবেষণা করারও সুযোগ পাওয়া যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই চার বছরের ডিগ্রি কোর্সের চল আছে। এ বার ভারতও সেই পথেই হাঁটছে।
সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়ের মতে নতুন এই ব্যবস্থায় ছাত্রছাত্রীরা উপকৃতই হবে। নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ ছাত্রছাত্রীদের খুবই উপকার করবে।”
নতুন শিক্ষানীতিতে শিক্ষাকে ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি’ করে তোলার কথা বলা হয়েছে। এর মানে কি এক বিষয়ের স্নাতক অন্য বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষায় যেতে পারবে? অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায় জানান, এই পদ্ধতিতে এক জন পড়ুয়ার একাধিক বিষয়ে কেরিয়ার গড়ার সুযোগ থাকবে।
চার বছরের বিএস এবং এক বছরের এমএস পাঠক্রম– বিশ্বের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা হয় এই নিয়মেই। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র অধীনে স্নাতক স্তরের নতুন পাঠক্রম গড়ে তোলা হয়েছে সেই কায়দাতেই। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়েই চার বছরের বিএস পাঠক্রম এবং এক বছরের এমএস পাঠক্রমে পড়ানো হয়। আমাদের নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী স্নাতক স্তরের পঠনপাঠনেও থাকছে এই ব্যবস্থা। ফলে আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরাও আন্তর্জাতিক স্তরে পড়ুয়াদের সঙ্গে ‘কম্পিট করতে পারবে’।” তিনি এ-ও বলেন যে, নতুন শিক্ষানীতিতে পড়ুয়া-কেন্দ্রিক পঠনপাঠনে জোর দেওয়া হচ্ছে। তাঁর মতে, এতে ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যবিষয় তথা সেই সংক্রান্ত আলোচনা-প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ বাড়বে।
গবেষণায় উৎসাহ দিতে জাতীয় শিক্ষানীতিতে চার বছরের কোর্স শেষে গবেষণা করার সুযোগ থাকছে ছাত্রছাত্রীদের সামনে। অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানান, সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। বরাবরই সেখানকার পড়ুয়াদের গবেষণায় উৎসাহ দেওয়া হয়। চেষ্টা করা হয় যাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা গবেষণা এবং তার প্রয়োগ ও চর্চায় দক্ষ হয়ে ওঠে।
এই প্রতিবেদনটি ‘সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।