বাড়ির খুদে আদরের সদস্য সে। তাকে সঙ্গে নিয়ে ছোটখাটো বেড়ানোর পরিকল্পনা লেগেই থাকে বাড়িতে। তবু প্রত্যেকবার আদুরে চারপেয়েকে রেখে যেতে হয় কাকও কাছে,। সফরের ধকল থাকে, প্রায় কোনও হোটেলেই পোষ্য নিয়ে থাকার অমুমতি মেলে না। সব মিলিয়ে তাকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া সাধ থাকলেও পিছিয়ে আসতে হয় নানা আশঙ্কায়। আপনার সমস্যা নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশিষ্ট পশু চিকিৎসক।
ছোট ছোট সফরে নিয়ে গিয়ে অভ্যাস করান
পশু চিকিৎসক ড. অভিরুপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, এক্ষেত্রে বিড়াল তা’ও গাড়িতে ছোটখাটো সফরে নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারে, কিন্তু কুকুরদের ব্যপারটা একটু আলাদা। তাই তাঁর পরামর্শ, একটানা লম্বা সফরে হঠাৎ পোষ্যকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ার বদলে ছোট ছোট ড্রাইভে নিয়ে গিয়ে দেখুন। আপনার পোষ্য গাড়িতে চড়ে বেড়াতে স্বচ্ছন্দ কিনা, আর অচেনা মানুষ ও পোষ্যদের সঙ্গে তাদের মিশতে দিন। কারণ অনেকসময় দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির কুকুররা সামাজিক উদ্বেগে ভুগে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ড. বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘উদ্বেগ না কাটলে পেশাদার প্রশিক্ষকের সাহায্য নিন। দরকার বুঝলে পশু চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এ সব ক্ষেত্রে আমরা উদ্বেগ কাটানোর জন্য পোষ্যকে উদ্বেগ কাটাতে আয়ুর্বেদিক ওষুধ দিই। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে হার্বাল অ্যাংজিয়োলাইটি মেডিসিন।’
সফরে যেতে সঙ্গে রাখুন কিছু সাধারণ প্রয়োজনীয় ওষুধ
ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ দিচ্ছেন, সফরে যাওয়ার সময় অবশ্যই করে সঙ্গে রাখুন বিভিন্ন সাধারণ আপৎকালীন ওষুধ। যেমন, পেট খারাপের, জ্বরের, বমির এবং অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ইত্যাদি। পারলে একটা ছোট অক্সিজেনের ক্যান বহন করুন সঙ্গে।
পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন
বেড়াতে যাওয়ার ঠিক আগে, অবশ্যই একবার পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন, আর কোনও অবাঞ্ছিত পরিস্থিতিকে কীভাবে সামাল দেবেন জেনে নিন ভালভাবে।
পোষ্যকে আরাম দিতে বিরতি দিন একটানা গাড়ি চালানোর সময়
দুরত্ব যতটাই হোক না কেন, একটানা যাত্রায় বিরতি দিন। পোষ্যকে মাঝেমাঝে গাড়ি থেকে নামিয়ে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দিন। এমনকি একটানা অনেকক্ষণ এসি চালিয়েও রাখতে নিষেধ করছেন ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, গাড়ির টানা এসি-তে পাগ বা শি -ৎজু জাতীয় কুকুরদের কষ্ট হয়। তাই মাঝেমাঝে গাড়ির কাচ নামিয়ে হাওয়া খেলতে দিন, ভেতরে, যাতে পোষ্যদের দম বন্ধ না লাগে।
খাবারের দিকে থাক বিশেষ নজর
সফর চলাকালীন যদি পোষ্য বেশি কিছু খেতে না চায়, তাহলে জোর না করে তাকে নিজের মতো থাকতে দেওয়াই উচিত, বলছেন ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায়। খেতে দিলেও যেন শুকনো অল্প খাবার দেওয়া হয়। আর পরিমাণমতো জল খাওয়ানো খুব জরুরি।
তা’হলেই আর বাড়িতে রেখে নয়, এবার পোষ্যকে সঙ্গে নিয়েই বেড়ানোর পরিকল্পনা হোক।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।