মোবাইলের পরে টিভিতে। বছর পাঁচেক আগে ভারতের মোবাইল বাজারে পা রেখেছিল চিনা সংস্থা সাওমি। শুধু অনলাইনেই নিজের মোবাইল বিক্রি করা শুরু করে এই সংস্থাটি। বাজারে তখন দাপট স্যামসুং-এর। নিভু নিভু করছে নোকিয়া। জোরে দৌড়চ্ছে মোটারোলা, আসুস-এর মতো সংস্থা।
পাঁচ বছর পরে ছবিটি বেশ বদলে গিয়েছে। স্যামসাং নেমে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে। আর প্রথম স্থানটি দখল করে নিয়েছে সাওমি। ভারত জুড়ে প্রায় কয়েক কোটি নাগরিক এই সংস্থার মোবাইল ব্যবহার করেন। ভারতে এর মধ্যে কারখানাও খুলে ফেলেছে সাওমি।
এক বছর আগেই আরও একটি বিষয়ে ঢুকে পড়েছে সাওমি, টিভি। দিন বদলাচ্ছে। আগের সিআরটি টিভির জায়গায় ফ্ল্যাট এলসিডি টিভি বেশ কিছু দিন আগেই এসে গিয়েছে। ধীরে ধীরে টিভির ডিসপ্লে উন্নত হয়েছে। ফুল এইচডি থেকে এসেছে ফোর-কে ডিসপ্লে।
আরও পড়ুন: এক মাসের মধ্যেই ভারতে আসতে চলেছে রিয়েলমি এক্স-টু
পাশাপাশি, টিভি ক্রমেই স্মার্ট হয়ে উঠেছে, অনেকটা মোবাইলের মতো। এখন তো অ্যানড্রয়েড চালিত টিভিও এসে গিয়েছে। টিভির এই পরিবর্তনশীল বাজার ধরতেই নেমেছে সাওমি। এবং এখানেও তার প্রধান হাতিয়ার দাম। যে দামে যে জিনিস দিচ্ছে সাওমি, তা অন্য সংস্থার ক্ষেত্রে মিলছে প্রায় কয়েক গুণ বেশি দামে। কিন্তু এখানে একটি মূল প্রশ্ন থেকেই যায়, গুণমান কি ভাল হবে? অনেকেই চিনা সংস্থা বলে নাক সিঁটকোন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে মোবাইলের ক্ষেত্রে সাওমি-র গুণমান নিয়ে সে ভাবে প্রশ্ন ওঠেনি। আশা করা যায় টিভির ক্ষেত্রেও তাই হবে। এর মধ্যেই এক বছর কেটেছে এবং ভারতের স্মার্ট টিভির দুনিয়ায় প্রথম কয়েক জনের মধ্যে চলে এসেছে সাওমি। অনলাইনে সাওমি-র টিভি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। সাওমির দাবি, এর মধ্যে প্রায় ৩০ লক্ষ টিভি তারা বিক্রি করেছে।
এ বার সাওমির নতুন সংযোজন ফোর-কে টেলিভিশন। দুর্গাপুজোর মুখেই বাজারে এই নতুন টিভি নিয়ে আসে সাওমি। ফোর-কে টিভি সাওমির টিভির ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। এবং প্রতি বারের মতো এ বারও চমক দিয়েছে সাওমি। ৬৫ ইঞ্চির ফোর-কে টিভি নিয়ে এসেছে তারা। সাওমির দাবি, ভারতের বাজারে এত বড় অ্যানড্রয়েড টিভি আর কোনও সংস্থার নেই। এই টিভির জন্য যে ফোর-কে আল্ট্রা-এইচডি প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে তার রিফ্রেশ রেট ৬০ গিগাহার্জ এবং রেসপন্স টাইম ৮ মিলিসেকেন্ড এবং প্রায় ৮৮ শতাংশ রং দেখাতে পারে এনটিএসসি গ্যামেট বিভাগে। এর কন্ট্রাস্ট রেসিও ১২০০:১। প্রায় ১৭৮ ডিগ্রি পর্যন্ত টিভি দেখা যাবে। এ ক্ষেত্রে ভিভিড পিকচার ইঞ্জিন-এ বলে একটি ব্যবস্থা ব্যবহার করছে সাওমি। এর সাহায্য কালার স্যাচুরেশন, কনট্রাস্ট, ব্রাইটনেস ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে অ্যানড্রয়েড-নাইন থাকছে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে। পাশাপাশি, নেটফ্লিক্স, অ্যামজন প্রাইম-এর মতো অ্যাপও মিলে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফের ‘অল ইন ওয়ান’ ধামাকা অফার জিয়ো-র! তবে এ সুবিধা পাবেন কেবল তাদের ফোন গ্রাহকরাই
এ বার আসা যাক শব্দের বিষয়ে। এখানে ২০ ওয়াট শব্দ পাওয়া যায়, চারটি ড্রাইভার-এর মাধ্যমে। যার মধ্যে দু’টি টুইটার এবং দু’টি সাব উফার রয়েছে। এই টিভিতে ডলবি অডিও এবং ডিটিএস এইচডি অডিও রেকর্ডিং-এর সুবিধা রয়েছে। সামনেই দীপাবলি। তার আগে এ টিভি কিনলে মনোরঞ্জন জমে উঠবে বলে দাবি সাওমি-র।