স্মার্টফোনের জগতে নতুন সংযোজন ভাঁজ করা ফোন। স্মার্টফোন আসার আগে আমরা স্লাইড করা যায় এমন ফোন দেখেছি। তবে স্মার্টফোনে এমন কিছু প্রথমে দেখা গেল স্যামসাং-এর দৌলতে। স্যামসাং নিয়ে এসেছিল গ্যালাক্সি ফোল্ড। পাশাপাশি, নানা বিতর্কে জড়িয়ে থাকা হুয়াই-ও নিয়ে এসেছিল মেট-এক্স। এটা যেন দক্ষিণ কোরিয়া আর চিনের দুই দৈত্যের লড়াই। সেই যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার পাল্লা ভারী হল। সে দেশের আর এক দৈত্য এলজি নিয়ে এল ফোল্ডেবেল স্ক্রিন। না, এটা ঠিক ভাঁজ করা ফোন নয়। ফোনের সঙ্গে জুড়ে যাবে একটি আলাদা স্ক্রিন। ফলে, পুজোর মজা এ বার দ্বিগুণ হবে!
কথায় আছে, ‘অধিকন্তু ন দোষায়।’ এলজি-র ভাবনাও বোধহয় তা ছিল। তাই আলাদা ভাবে এই বাড়তি স্ক্রিনটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি পাওয়া যাবে এলজি-র ফোন ভি৫০ থিন কিউ-র সঙ্গে। এটি একটি কেসের সঙ্গে আসে। প্রথমেই বলে রাখা ভাল, এটি কিন্তু মূল ফোনের ডিসপ্লে-কে বাড়িয়ে দেবে না। বরং অনেকটা এক্সটার্নাল মনিটরের মতো। তবে এখানে মূল ডিসপ্লে থেকে অ্যাপগুলিকে সরিয়ে আনা যায়, কিছু কন্ট্রোলও এই দ্বিতীয় স্ক্রিনটি থেকে চালানো যায়। এটি মূল ফোনের সঙ্গে পোগো পিনের সাহায্যে জুড়ে যাবে। পোগো পিনের সাহায্যে মূল ফোন থেকে এই দ্বিতীয় স্ক্রিনটি বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে। কিন্তু ফোনের সঙ্গে দ্বিতীয় স্ক্রিনটি সরাসরি জুড়ে যাবে না। তা হলে মূল ফোনের ডিসপ্লে এখানে আসছে কী করে? এলজি এ ক্ষেত্রে হাই ব্যান্ডউইথ, শর্ট রেঞ্জ, ওয়াই-ফাই চিপসেট ব্যবহার করে।
এ বার মূল স্ক্রিনের সঙ্গে এই দ্বিতীয় স্ক্রিনটির তুলনা করা যাক।এর ডিসপ্লে ভি৫০-র থেকে ছোট, ৬.২ ইঞ্চির। দু’টি স্ক্রিনের অ্যাসপেক্ট রেশিও ও রেজলিউশনের মধ্যেও কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। এবং দু’টি স্ক্রিনের কালার ব্যালান্স কিছুটা হলেও আলাদা। সমস্যা হল, আলাদা ভাবে দ্বিতীয় স্ক্রিনটির ডিসপ্লে পরিবর্তন করা যায় না।
এ বার অ্যাপ শেয়ারিং বিষয়টি দেখা যাক। এই দ্বিতীয় স্ক্রিনটিকে মূল মোবাইলের সঙ্গে জোড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূলমোবাইলের স্ক্রিনে বাঁদিকে শর্টকাট চলে আসবে। এই শর্টকাট স্পর্শ করলেই কয়েকটি অপশন দেখাবে। এর মধ্যে দু’টি স্ক্রিনের মধ্যে অ্যাপ শেয়ার করা, ভি৫০ বা দ্বিতীয় স্ক্রিনটিকে বন্ধ করে রাখা যায়। কয়েকটি ফার্স্ট পার্টি অ্যাপ এখানে ঠিকমতোই কাজ করে। যেমন, এলজি-র নিজের গেমিং অ্যাপটি চালু করলে দ্বিতীয় স্ক্রিনটিতে গেম কন্ট্রোল চলে আসবে। তবে সব অ্যাপের ক্ষেত্রে এমন হবে না। দ্বিতীয় স্ক্রিনটি চালু হলে কোন অ্যাপটি সেখানে খুলবে সেটাও ঠিক করে দেখা যায়। পাশাপাশি, দ্বিতীয় স্ক্রিনের ওয়ালপেপার এবং ডিসপ্লের কিছু পরিবর্তন করা যায়। তবে দু’টি স্ক্রিন মিলিয়ে ই-বুক পরবেন বা ওয়েব ব্রাউজ করবেন, এমন সুবিধা এই ডুয়েল স্ক্রিনে নেই। এ ছাড়া, অ্যানড্রয়েড১০-এ যে মাল্টি স্ক্রিনের সুবিধা থাকছে তা এই স্ক্রিনে পাওয়া যাবে না।