প্রতীকী চিত্র
মা লক্ষ্মীকে ধন-সম্পদ ঐশ্বর্যের দেবী হিসেবে আরাধনা করা হয়। লক্ষ্মী আরাধনায় ‘শঙ্খ বাজিয়ে মাকে বরণ করেছি, প্রদীপ জ্বেলে আসন পেতেছি'। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের নিমতৌড়ির সাউতনচকের বিমল মিদ্যার বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় এ বার দেবী বরণ করা হল টাকার নোট দিয়ে।
শুনে অবাক হচ্ছেন তো? কোজাগরী পূর্ণিমার পূণ্য তিথিতে লক্ষ্মীপুজোর প্যান্ডেল সাজানোয় এমনই অভিনব আয়োজন করেছেন মিদ্যা পরিবার। প্রায় দু’কোটি পনেরো লক্ষ টাকার নকল নোট দিয়ে তৈরি হয়েছে অভিনব এই পুজোমণ্ডপ। ইতিমধ্যে সাড়া পড়ে গিয়েছে ওই এলাকা-সহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায়। ইউটিউব থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় রিবন আর নকল নোট দিয়ে তৈরি এই প্যান্ডেল মানুষের নজর কেড়েছে।
দূর থেকে বহু মানুষ আসছেন শুধু এই নোট সাজানো প্যান্ডেল দেখতে। বলাই বাহুল্য, বহু মানুষ একে আসল নোট ভেবে ভুল করছেন। কেউ কেউ ছুঁতেও যাচ্ছেন প্যান্ডেল। মৌচাক, মৌমাছি সোনার গয়না, গ্রহরত্ন, সব কিছুই এই নোট দিয়ে নিখুঁত শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সঙ্গে পাওনা, প্রতি নোটের গায়ে লেখা ‘হ্যাভ আ ফান’। অর্থাৎ ‘মজা করুন’।
মণ্ডপের মধ্যে একটি খাজানা বানানো হয়েছে যেখানে সোনা, রুপো, হীরের গয়না সাজানো আছে। ৫০, ১০০, ৫০০-র বিভিন্ন নোট দিয়ে সাজানো হয়েছে। টাকার মালা দিয়ে চাঁদোয়া বানানো হয়েছে। আর সঙ্গে রয়েছে সোনালি রং করা কিছু নকল টাকার বাট।
মা লক্ষ্মীর বসার জায়গাটি অত্যন্ত অভিনব। যেন ধনধান্যে পুষ্পে ভরা। লক্ষ্মীর ঘট থেকে বেরিয়ে আসছে সোনার কয়েন। পুরো মণ্ডপে যেন ছড়িয়ে পড়ছে প্রাচুর্য।
তবে এই ঘটনা ওই এলাকায় নতুন নয়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাউতানচকে প্রায় অনেক বাড়িতেই থিমের মণ্ডপ করে সাড়ম্বরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়।
বাড়ির কর্তা বিমল বিদ্যা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই থিমের মণ্ডপ করে পুজোর আয়োজন করেন তাঁরা। প্রতি বছরের ধারা অব্যাহত রেখে মা লক্ষ্মীর আরাধনায় মণ্ডপ সাজাতে ধনসম্পদের থেকে ভাল আর কী-ই বা হতে পারে। তাই টাকা দিয়েই টাকার দেবীর পুজো করতে চেয়েছেন। ‘চেরি অন দ্য টপ’’ হিসেবে একটি টাকার গাছ বানিয়েছেন। এই প্যান্ডেল দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করছেন ওই এলাকায়।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।