অরণ্য কালী
পশ্চিমবঙ্গে কালীপুজোর তালিকা থেকে বাদ যায় না দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের পুজোও। নদী-জঙ্গলের মাঝেই হয় অরণ্য কালীর পুজো। কথিত, আজ থেকে প্রায় ২৫০ বছর আগের তার সূচনা। পুরনো রীতিনীতি মেনে স্বমহিমায় এখনও পূজিত হয়ে আসছেন অরণ্য কালী। সেই ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু হাড়োয়ার বিদ্যাধরী নদীর ধারে খলিসাদি গ্রামের এক প্রাচীন কালী মন্দির।
শোনা যায়, আড়াইশো বছর আগে বিদ্যাধরীর জল ফুলেফেঁপে উঠে হয়ে বন্যায় ভাসিয়েছিল সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা। সে সময়ে নদীর পাশেই এক সাধু থাকতেন। জঙ্গলকে রক্ষা করতে সর্বপ্রথম এই অরণ্য কালীর পুজো শুরু করেছিলেন তিনিই। তার পরে ধীরে ধীরে তৈরী হয় একটি মন্দির, যা এখন অরণ্য কালীবাড়ি বলেই পরিচিত সুন্দরবন জুড়ে।
বর্তমানে এই গ্রামের এক ব্রাহ্মণ পরিবারের হাতে এই পুজোর দায়িত্ব রয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, মা অরণ্য কালী নাকি খুবই জাগ্রত। সকলের সব মনস্কামনা নাকি পূরণ করেন তিনি। আবার শোনা যায়, অতীতে এই মন্দির প্রাঙ্গণে পুজোর সময়ে ঢুকে পড়ত বাঘ। তাই পুরোহিত থেকে শুরু করে বাকি সবাই তাড়াতাড়ি পুজো সেরে বাড়ি ফিরে যেতেন।
মন্দিরে শ্যামাপুজোর দিনে নতুন মূর্তি স্থাপন করা হয় প্রত্যেক বছর, যা পরের বছর পুজোর আগের দিন বিসর্জন দেওয়া হয়। কালীপুজোর সময়ে এক সপ্তাহ ধরে চলে মায়ের আরাধনা। প্রচুর পাঁঠাবলিও হয় এখানে। সঙ্গে হয় ফল বলি। পুজো উপলক্ষে এখানে গ্রামবাসীদের খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানোরও রীতি আছে। প্রতি বছর গ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানকার পুজো দেখতে ভিড় করেন মানুষ।
অরণ্যকে রক্ষা করেন তিনি। ভাল রাখেন গ্রামবাসীদের। এই মা কালী তাই অরণ্য কালী নামেই পরিচিতি পেয়েছেন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ