লক্ষ্মীপুজোর শেষেই শুরু হয়ে যায় কালীপুজোর তোড়জোড়। এও তো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবগুলির অন্যতম বলে কথা। বিশেষ করে কলকাতার চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য কালীমন্দির। তার মধ্যে কিছু শতাব্দী প্রাচীন, আবার কিছু তার বিশেষ জনপ্রিয়তার কারণে পরিচিত।
কালীপুজোর দিনগুলিতে প্রায় বহু দর্শনার্থীর ভিড় জমে এই বিশেষ পুজোগুলিতে। তেমনই এক কলকাতার জনপ্রিয় কালীপুজো ফাটাকেষ্টর কালীপুজো। বর্তমানে ফাটাকেষ্ট আর নেই, কিন্তু এখনও সাড়ম্বরেই চলেছে তার এই বহু আলোচিত কালীপুজো।
দুর্গাপুজোর পর ঠিক কালীপুজোর ১০ দিন আগেই কুমারটুলিতে দেবীর চক্ষুদান করা হয়, এই বছরও গত ১৯ অক্টোবর মায়ের চক্ষুদান পর্ব শেষ হয়েছে। এক অপূর্ব রূপের এই কালী মূর্তি নজর কাড়ে সকলেরই। কালীপুজোর সময় বহু দর্শনার্থী ভিড় করেন এই পুজো দেখার জন্য।
ফাটাকেষ্টর নেপথ্য কাহিনি অনুযায়ী, এক সময় কলকাতার নাম করা দাপুটে লোক ছিলেন এই ফাটাকেষ্ট। আর তারই শুরু করা কালীপুজো আজ মানুষের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। পুরনো কলকাতার অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ পুজো ছিল এটি।
উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং একটু এগোলেই কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া। এখানেই এক গলির ভিতরে কয়েক বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে।
এই পুজো ছাড়া কলকাতার পুজো অসম্পূর্ণ, প্রতি বছর লাখ লাখ ভক্তের ভিড় জমে এই পুজোয়। কলকাতার বড় বড় পুজোকেও হার মানায়।
প্রতি বছর পুজো শুরু হয় রাত ৮টা থেকে। আর শেষ হয় পরের দিন সকালে। এই পুজো কেবল আড়ম্বরপূর্ণ নয়। পুজো করা হয় ভক্তিভরে।
এই পুজোয় এক সময় ঘুরে গিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে বহু নামী তারকা। তা ছাড়াও আশা ভোঁসলে, আর ডি বর্মনও উপস্থিত থাকতেন এই পুজোয়।
এমনও শোনা যায়, কুমারটুলি থেকে ফাটাকেষ্টর ঠাকুর না বেরোলে নাকি অন্য কোনও ঠাকুর মণ্ডপে যায় না।
বিশাল শোভাযাত্রার মাধ্যমে ঠাকুরকে নিয়ে আসা হয় পুজোর স্থানে। রাস্তা জুড়ে থাকে আড়ম্বরপূর্ণ সাজ। কলকাতা এবং কলকাতার বাইরের বহু মানুষ মানত করেন এই দেবীর কাছে। মনস্কামনা পূরণ হলে দেবীর কাছে ছুটে আসেন তাঁরা।এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।