ছবি: সংগৃহীত
পর্যটনস্থান হিসেবে ডুয়ার্সের জুড়ি মেলা ভার। ঘুরতে গেলে গরুমারা অভয়ারণ্য দেখে যান পর্যটকরা। কিন্তু জানেন কি, এই ডুয়ার্সের জঙ্গলেই আছে গা ছমছমে কালীতীর্থ! দেবী ‘পেটকাটি’ মা।
ময়নাগুড়ি রোড দিয়ে এসে দোমহনী কাঠালবাড়ি গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে যাচ্ছে কলাখাওয়া নদী। এই নদীর পাড়েই অবস্থিত এই মন্দির।
কিন্তু দেবীর নাম ‘পেটকাটি’ কেন?
জনশ্রুতি রয়েছে কষ্টিপাথরের এই দেবীমূর্তি গ্রামবাসীরা মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করেছিলেন। মাটি খোঁড়ার সময় কোদাল লেগে দেবীর পেট কেটে গিয়েছিল। তখন থেকেই দেবীর নাম হয়েছে ‘পেটকাটি’ মা।
তবে দেবীমূর্তির গড়ন সাধারণ মানুষের চেনা কালীমূর্তির মতো নয়। প্রায় সাড়ে চার ফুটের এই দেবীমূর্তি দশভুজা। তবে তাঁর তিনটি হাত ভাঙা। বাঁ দিকের হাতগুলিতে রয়েছে হাতি, ঘণ্টা, ছিন্ন নরমুণ্ড, নরমূর্তি এবং এক হাত ভাঙা। ডান দিকের হাতগুলিতে আছে হাতির মুখের অংশ, মানুষের কঙ্কাল, ঘণ্টা এবং বাকি দু’টি হাত ভাঙা।
নাক ভাঙা এবং মায়ের উদরে রয়েছে একটি গর্ত, যা থেকে বেরিয়ে আছে একটি কাঁকড়া বিছে। দেবী পদ্মের উপর বিরাজমান। তাঁর পায়ের নিচে একটি নারীমূর্তি এবং এক দিকে শিয়াল ও অপর দিকে পেঁচা। দেবী সর্পালঙ্কারে সজ্জিতা। মাথায় রয়েছে সাপের মুকুট। মূর্তির মাথার দু’দিকে হাতির লম্বা শুঁড়। কালীপুজোর দিন দেবীকে ধূমাচন্ডিরূপে পুজো করা হয়।
তবে দেবীর রূপ নিয়ে বহু মতান্তর রয়েছে। কারও মতে দেবী চণ্ডী, আবার কেউ বলেন এটি বৌদ্ধ তন্ত্রের দেবী বজ্রযানী। এই মূর্তিটি বজ্রযানী হওয়া অসম্ভব নয়, কারণ একসময়ে এই অঞ্চল ছিল বৌদ্ধ তন্ত্রসাধকদের পীঠস্থান।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।