পাতালভেদী দক্ষিণাকালী
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কয়েকটি কালীপুজো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সাড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। কালীপুজোর অমবস্যা তিথিতে বহু মানুষের সমাগম হয় এই স্থানগুলিতে। তেমনই এক পুজো রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরীর পাতালভেদী দক্ষিণাকালী ৷ কথিত, প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে পাতাল ভেদ করে স্বয়ং উঠে এসেছিলেন দেবী। আর সেই থেকেই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরের ময়দা নামক স্থানে পূজিত হয়ে আসছেন এই পাতালভেদী দক্ষিণাকালী ৷ কালীপুজোর রাতে হাজার হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান এই পুজো দেখতে ৷ এই কালী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরী ৷ এই কালী পুজোকে ঘিরে রয়েছে অনেক কাহিনি।
কথিত, জঙ্গলে ঘেরা এক পথ দিয়ে বাণিজ্যে যেতেন রাজা ৷ একদিন নদীর ধারে একটি বকুল গাছের ডালে এক বালিকাকে দোল খেতে দেখেন ৷ তাঁকে দেখে আশ্চর্য হন রাজা ৷ সেই বালিকা রাজাকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে পরে আবার খোঁজ করেছিলেন তিনি। কিন্তু শত খোঁজ করলেও তাঁর দেখা আর পাননি৷
পরে তিনি একদিন স্বপ্নাদেশ পান, ওই বকুল গাছের কাছেই মাটির নীচেই রয়েছেন দেবী দক্ষিণাকালী৷ আর তিনি নির্দিষ্ট সময়ে পাতাল ভেদ করে উঠবেন ৷ দেবী তাঁকে পুজোর ব্যবস্থার কথা জানান। তার পরেই এই স্থানে এক মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরী ৷
প্রচলিত কথা অনুযায়ী, বহুবার রাজা শিলাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন ৷ এমনকি, হাতি দিয়েও তোলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কোনওভাবেই সেই মূর্তি তুলে আনা সম্ভব হয়নি৷ একদিন হঠাৎ নির্দিষ্ট সময়ে নিজে থেকেই মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে সেই স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত শিলা মূর্তি। সেই শিলাকেই দেবীরূপে পুজো করা হয়। রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরীর দেখা সেই বকুল গাছ এখনও রয়েছে মন্দিরের এক প্রান্তে যা আপনি সেখানে গেলেই প্রতক্ষ্য করতে পারবেন ৷
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ