গিরিশ পার্কের কেরোসিন ব্যবসায়ী কৃষ্ণদাস কুণ্ডু ও তাঁর স্ত্রী রজমুনি দাসী ১২৭৬ বঙ্গাব্দে মায়ের স্বপ্নাদেশ পান।
তার পরেই ৬ নং পিয়ারী মোহন পাল লেনের তিন খিলান বিশিষ্ট চণ্ডীমণ্ডপ ও ঠাকুরদালান কিনে মায়ের আরাধনা শুরু করেন।
দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এই পুজোয় প্রতিমা এক চালার। সিংহবাহিনী মাকে মহালয়ায় লাল পাড় সাদা শাড়ি পরিয়ে গঙ্গাজল দিয়ে বরণ করে কুণ্ডু বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
রথের দিন কাঠামো পুজো হয় এবং ঘট স্থাপিত হয় প্রতিপদে। বৃহৎ নন্দীকেশর মতে সাধিত দেবীর পুজো শুরু হয় প্রতিপদে, নবম্যাদি কল্পের মাধ্যমে।
আগে বাড়িতে এসে মূর্তি গড়তেন শিল্পী। তবে বর্তমানে তা না হওয়ায় ষষ্ঠীর দিন কাঠামো পুজোর গরান কাঠটি মায়ের মূর্তির সঙ্গে বেঁধে দিয়ে দক্ষিণ পদ হিসেবে পুজো করা হয়।
এই বাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল- ষষ্ঠীর দিন পাটের দড়ি দিয়ে দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখা আংটার সঙ্গে মায়ের মূর্তি বেঁধে রাখা হয়। উদ্দেশ্য মা যাতে চলে না যান।
অষ্টমীতে এয়োস্ত্রীরা আলতা পরিয়ে সধবা পুজো করে থাকেন। আর দশমীতে বরণ শেষে কনকাঞ্জলি দিয়ে দেবীশক্তিকে কন্যারূপে আরাধনা করা হয়।
আগে দশমীতে শালকাঠে বসিয়ে বিহারী বাহকের কাঁধে দেবীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হত। যদিও এখন বাহকের অভাবে গাড়িতে করেই প্রতিমা নিরঞ্জনে যায়।
পুজোর ভোগের অন্যতম বিশেষত্ব হল নবমীতে মোচা ও মধু সহযোগে ভোগ নিবেদন। এ ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য ভোগ।
পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত লুচি, বিভিন্ন ভাজা, ফল, মিষ্টি সহযোগে মায়ের ভোগ দেওয়া হয়। এই বাড়িতে অন্ন ভোগের রীতি নেই।
অষ্টমীতে সন্ধি পুজোয় ৪০ কেজি চালের উপর দেড় কেজি নাড়ুর মুন্ডি করে ও তার চারপাশে বিভিন্ন রকমের ফল সাজিয়ে মাকে নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হয়ে থাকে।
মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে এ বাড়ির গৃহিণীরা পরিবারের মঙ্গলের উদ্দেশ্যে অষ্টমীর সন্ধি পুজোয় চন্দন ক্ষীরের নৈবেদ্য ভোগ দিয়ে থাকেন।