শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, দুর্গাপুজোর উদযাপনে জোর কদমে প্রস্তুতি চলছে বাংলাদেশেও। রাজধানী ঢাকা-সহ ওপার বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক ঐতিহ্যশালী শারদীয়া উৎসব পালিত হয় মহা ধুমধামে।
ঢাকেশ্বরী মন্দির অন্যতম বাংলাদেশের প্রাচীনতম মন্দিরগুলির অন্যতম। জানা যায়, রাজা বল্লাল সেন এক সময়ে বুড়িগঙ্গার নদীর তীরে জঙ্গলে মা দুর্গার একটি মূর্তি খুঁজে পান। সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন তিনি। সেই থেকেই এই মন্দিরের নাম ঢাকেশ্বরী মন্দির।
এই মন্দিরের নাম অনুসারে ঢাকার নামকরণ হয় এমনটাও শোনা যায়। মুঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি মান সিংহ চারটি শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এখানে। প্রতি বছর পুজোয় এখানে দর্শকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। মন্দিরের পুরনো শিল্পশৈলীও দেখতে যান দর্শকেরা।
ঢাকার রামকৃষ্ণ আশ্রমের পুজোও বেশ বিখ্যাত। ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয় এই আশ্রম। এখানকার পুজোর মূল আকর্ষণ কুমারী পুজো। সেই পুজো দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল নামে অষ্টমীতে।
ঐতিহ্যের চর্চা হবে আর পুরনো ঢাকার দুর্গাপুজোর নাম উঠবে না, তা-ও কি হয়? শাঁখারিবাজারের দুর্গাপুজো পুরনো ঢাকার মূল আকর্ষণ। শাঁখা, পলা-সহ হরেক মণিহারী সামগ্রীর দোকান রয়েছে এখানে। মোট ন’টি পুজো হয় শাঁখারিবাজারে। প্রতিটি পুজো ৪০ বা ৫০ বছরের পুরনো। এখানকার বেশ কিছু বাড়িতেও দুর্গাপুজো হয়।
১৯৭১ সালে হানাদারদের হাতে ধ্বংস হয়েছিল রমনা কালী মন্দির। তার পর থেকে এখানে কোনও স্থায়ী মন্দির স্থাপিত না হলেও মণ্ডপ গড়ে পুজো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হওয়ায় মূলত ছাত্রছাত্রীদের ভিড় বেশি এখানে।
বাংলাদেশে সাধারণত থিম পুজো হয় না। তবে বাগেরহাট জেলার শিকদার বাড়িতে থিম পুজোর চল রয়েছে। ২০১০ সালে এই পরিবারের তরফে লিটন শিকদার নামে এক ব্যবসায়ী ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই পুজো শুরু করেন। পুজোর থিমে প্রতি বছর তুলে ধরা হয় নানা পৌরাণিক কাহিনি।
পাঁচ দিন ধরে দুর্গাপুজোর আমেজে মেতে ওঠেন পদ্মাপারের প্রতিবেশীরা। সব আচার অনুষ্ঠান মেনে জাঁকজমক ভাবে দুর্গাপুজো পালিত হয় বাংলাদেশে।