রামের অকালবোধনের পুরোহিত হিসেবে রাবণের নাম উত্থাপন করেন স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা। তিনিই পরামর্শ দেন, যে এই পুজোর উপযুক্ত পুরোহিত হতে পারেন রাবণই।
রাম-রাবণের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে যখন একে একে লঙ্কার বড় বীররা ধরাশায়ী হচ্ছেন, তখন রাবণ মা দুর্গার শরণাপন্ন হন। তিনি একাগ্র চিত্তে দুর্গার স্তব শুরু করেন।
সন্তুষ্ট হয়ে দুর্গা কালীরূপে রাবণকে আশীর্বাদ দিলেন। মা কালীর কোলে আশ্রয় পেয়ে রাবণ যুদ্ধে অপরাজেয় হয়ে উঠতে লাগলেন।
এই পরিস্থিতিতে দুর্গাকে তুষ্ট করা ছাড়া রাবণকে পরাস্ত করার আর কোনও উপায় ছিল না রামচন্দ্রের কাছে। তাই, বসন্তকালের বদলে শরৎকালেই তাঁর পূজা আয়োজন করা মনস্থ করলেন রাম।
কিন্তু, সেই পুজোয় কে করবেন পৌরোহিত্য? প্রজাপতি ব্রহ্মার পরামর্শে রক্ষরাজ রাবণকেই পৌরোহিত্যের প্রস্তাব দেন রঘুনন্দন।
বোধনের মন্ত্র বলার সময় রাবণ উচ্চারণ করেন, ”রাবণস্য বধার্থায়…” অর্থাৎ নিজের মৃত্যুর জন্য পুজোয় নিজেই পৌরোহিত্য করে, সংকল্প করলেন রাবণ।
এই কাহিনি বাল্মীকি রামায়ণে নেই, পরবর্তীকালে সংযোজিত হয়েছে। রামায়ণের নানা সংস্করণ ছড়িয়ে রয়েছে। চেনা কাহিনি বদলে বদলে গিয়েছে ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন সংস্কৃতিতে!
বাল্মীকির রামায়ণে রামচন্দ্রের এই পুজোর উল্লেখ নেই। তবে কৃত্তিবাস ওঝা সবিস্তারে লিখেছেন অকালবোধনের কথা।
এ ছাড়া দেবী ভাগবত পুরাণ ও কালিকাপুরাণেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।