ধনতেরস-এর দিন সোনা বা মূল্যবান সম্পদ কেনার চল বহু কালের। প্রচলিত বিশ্বাস, এই দিন সোনা বা মূল্যবান কিছু কিনলে ধন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, জানেন কি ‘ধনতেরস’ শব্দের সঙ্গে ধনের কোনও সম্পর্ক নেই।
সমুদ্র মন্থনে অমৃত উঠেছিল, তেমনই উঠেছিল বিষ। আমরা সকলেই জানি, সেই বিষ কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন দেবাদিদেব মহাদেব।
কিন্তু, এছাড়াও সমুদ্র মন্থনে উঠে এসেছিল আরও অনেক কিছু। যার সঙ্গে রয়েছে এই ধনতেরস নামকরণের যোগাযোগ।
অমৃত প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে ক্ষীরসাগর মন্থন করেছিল দেবতা ও অসুরগণ। এক্ষেত্রে মন্দার পর্বত মন্থনদণ্ড হিসাবে এবং শিবের স্কন্ধসঙ্গী নাগরাজ বাসুকী মন্থনরজ্জু হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং বিষ্ণুর কূর্ম অবতার তার দেহের উপর মন্দার পর্বতকে ধারণ করেছিলেন।
সমুদ্র মন্থনে হলাহল এবং অমৃত ছাড়াও উঠে এসেছিল রম্ভা, মেনকা, প্রমুখ অপ্সরারা, কামধেনু, ঐরাবত, কৌস্তুভ মণি, পারিজাত, চন্দ্র, শঙ্খ (যা পরবর্তীকালে বিষ্ণুর শঙ্খ পাঞ্চজন্য হিসাবে পরিচিত হয়) এবং আরও অনেক কিছু।
এরপর সমুদ্র মন্থনে উঠে আসে অমৃত। কিন্তু, জানেন কি কে এই অমৃত পাত্র হাতে নিয়ে উঠে আসেন সমুদ্র থেকে? তিনি ধন্বন্তরি।
দেবতা এবং অসুরদের বহু চেষ্টার পর ধন্বন্তরিই নিজের হাতে অমৃত কলস নিয়ে উঠে আসেন সমুদ্র থেকে এবংএই ধন্বন্তরির নাম থেকেই এই দিনের নাম ‘ধনতেরস’।
ধন্বন্তরি হলেন দেবতাদের চিকিৎসক তথা দেববৈদ্য৷ তিনিই অমৃতভাণ্ড নিয়ে উঠে আসেন সমুদ্র থেকে। তাই, ‘ধনতেরস’ ধনকামনার দিন নয়, ‘ধনতেরস’ মূলত স্বাস্থ্যকামনার দিন। অক্ষয় স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘ আয়ু কামনাই মূলত ‘ধনতেরস’-এর মাহাত্ম্য।
তবে এছাড়াও, সমুদ্র মন্থনে উঠে এসেছিলেন দেবী লক্ষ্মী, যিনি ধন সম্পদ এবং সৌভাগ্যের দেবী। তাই, তাঁর জন্য এই দিনকে ধনকামনার দিন হিসাবে গণ্য করা হয়ে আসছে।
তাই, এই দিন ভক্তগণ কুবের দেবের আরাধনা করে থাকেন এবং সম্পদ লাভের কামনায় মূল্যবান সামগ্রী ক্রয় করে থাকনে।