হিন্দু শাস্ত্র মতে মা লক্ষ্মীকে ধনসম্পত্তি, শান্তি ও সমৃদ্ধির দেবী হিসাবে পুজো করা হয়। আশ্বিনের শেষ পূর্ণিমার সন্ধ্যায় পুজো পান কোজাগরী লক্ষ্মী। দুর্গাপুজোর শেষ। এ বছর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হবে আগামী ২৯ আশ্বিন।
বাড়িতে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে এই লক্ষ্মীপুজো করা হয়। পুরাণে দেবী লক্ষ্মীর ৮টি বিশেষ রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়, যার মাহাত্ম্য আটটি ক্ষেত্রে। বিভিন্ন উদেশ্যে লক্ষ্মীর বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক তার বিশদ বিবরণ।
আদিলক্ষ্মী: লক্ষ্মীর প্রথম রূপ আদিলক্ষ্মী। তাঁর পুজো করলে সমস্ত ধরনের সুখ-সম্পদ লাভ করা যায়। প্রাচীনতা এবং সমৃদ্ধির প্রতীক এই দেবীকে সাধারণত সৃষ্টির প্রথম শক্তি হিসেবে দেখা হয়।
ধনলক্ষ্মী: ধনলক্ষ্মী হলেন ধন, সম্পদ এবং সমৃদ্ধির দেবী। তাঁকে সাধারণত ঘর, ব্যবসা ও সংসারে প্রাচুর্য আনতে পুজো করা হয়। তাঁর আশীর্বাদে ধন-দৌলতের অধিকারী হয় মানুষ। ধনলক্ষ্মী প্রসন্ন হলে নানা উৎস থেকে আয় হয়।
ঐশ্বর্যলক্ষ্মী: ঐশ্বর্যলক্ষ্মী সম্পদ, ভোগ-বিলাস এবং প্রাচুর্যের দেবী। সাধারণত আর্থিক সাফল্য, সমৃদ্ধি এবং সুখের প্রতীক হিসেবে পূজিত হন তিনি। মনে করা হয়, এই লক্ষ্মীর পুজো করলে সমাজে প্রচুর মান-সম্মান মেলে।
সন্তানলক্ষ্মী: সন্তানলক্ষ্মী হলেন সন্তানসম্ভাবনা ও সন্তান লাভের দেবী। তিনি সাধারণত পরিবারে সন্তানের সুখ, স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা বৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে পূজিত হন। নিঃসন্তান দম্পতিরা এই লক্ষ্মীর পুজো করলে সন্তান সুখ লাভ করতে পারেন।
ধান্যলক্ষ্মী: ধান্যলক্ষ্মী হলেন কৃষি ও খাদ্যের দেবী, যিনি ধানের উৎপাদন ও কৃষির সমৃদ্ধির প্রতীক। তাঁকে বিশেষত কৃষকরা পুজো করেন। কারণ, এই দেবীর আশীর্বাদে ভাল ফসল উৎপাদন হয়।
গজলক্ষ্মী: শাসন, সরকার ইত্যাদি সমস্ত ধরনের সুখের কামনা করলে গজের ওপর অধিষ্ঠিত লক্ষ্মীর আরাধনা করা উচিত। কৃষকরাও এই দেবীর আরাধনা করেন।
বীরলক্ষ্মী: বীরলক্ষ্মী হলেন লক্ষ্মীদেবীর এক শক্তিশালী রূপ, যিনি সাহস, শক্তি ও বীরত্বের প্রতীক। অকালমৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে বীর লক্ষ্মীর পুজো করা হয়। তা ছাড়া, মনে সাহসের জন্ম দিতেও এই লক্ষ্মীর পুজো করা হয়ে থাকে।
বিজয়লক্ষ্মী: বিজয়লক্ষ্মী জয় এবং সফলতার প্রতীক। তাঁকে বিশেষত যোদ্ধা এবং বিজয়ী ব্যক্তিরা পুজো করে থাকেন। সব সময়ে শত্রুর ভয় থাকলে বিজয়লক্ষ্মীর পুজো করা উচিত।এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।