রান্নাঘরের সাজসজ্জা
অবহেলায় বাড়ির এক কোণে আলোবাতাসবিহীন তেলচিটে রান্নাঘরের জাতে ওঠার পালা শুরু আশির দশকে। এ কালে স্মার্ট ফোনের মতোই রান্নাঘরও স্লিম আর ঝকঝকে। রান্নাঘর মানে কাঠ, ঘুটে, কয়লার উনুনের ধোঁয়া আর লঙ্কা ফোড়নের ঝাঁজ— সে সব এখন অতীত। ঝাঁ চকচকে ওপেন কিচেনে রান্নার সঙ্গে চলে জমিয়ে আড্ডা। তা এহেন রান্নাঘরকে পুজোর সময় একটু অন্য রকম করে সাজালে সবারই ভাল লাগবে। বাড়ির গৃহিণী তো বটেই, বড় বা খুদে— সব সদস্যরাই আজকাল শেফের দায়িত্ব পালন করেন হাসিমুখে।
চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা মাফিক রান্নাঘরের সাজবদল করলে চোখের আরাম তো বটেই, তা ছাড়া রান্নার সময় অযথা খোঁজাখুঁজি করে সময় নষ্ট করতে হবে না। রান্নাঘর খুব ছোট্ট হলে দেওয়াল সরিয়ে ওপেন কিচেন করে নিলে বেশ খোলামেলা লাগবে। দেওয়াল সরাতে অসুবিধে হলে দরজা খুলে নিলেও চলে। তবে সবার আগে রান্নাঘরে রং করিয়ে নিন। বাড়ির বড় রান্নাঘরের জন্য উজ্জ্বল রং আর ফ্ল্যাটের ছোট্ট ওপেন কিচেনে হালকা উজ্জ্বল রং ব্যবহার করুন। মডিউলার কিচেন এক দিকে দেখতে সুন্দর, অন্য দিকে হাতের কাছে গোছানো থাকায় সময় বাঁচে। ইদানীং প্লাই উড ছাড়াও রাবার উড, সলিড উড এবং স্টিলের মডিউলার কিচেন অনেক বেশি টেকসই এবং দেখতেও সুন্দর।
অনেক রান্নাঘরে পাথরের সিঙ্ক থাকে। তা বদলে স্টিলের সিঙ্ক করিয়ে নিতে পারেন। খুব বেশি খরচ হবে না। দেখতে তো ভাল লাগবেই, কাজেরও সুবিধে হবে। ছোট কিচেনে একটা বড় সিঙ্কের বদলে দুটো ছোট সিঙ্ক রাখলে কাজের সুবিধে হয়। ভেবে দেখতে পারেন। রান্নাঘরে বড়সড় জানলা থাকা দরকার। চিমনি থাকলেও জানলা খোলা রাখুন। গাড় রঙের ক্যাবিনেট লাগালে রান্নাঘরকে ঘিঞ্জি লাগবে। অতিরিক্ত বেশি আর বড় ক্যাবিনেটের বদলে মাঝারি আকারের উপর-নীচ মিলিয়ে ক্যাবিনেট বানালে ভাল হয়। রান্নাঘর সুন্দর আর তকতকে রাখার মূলমন্ত্র ঘর শুকনো রাখা। জলময় করে রাখলে ক্যাবিনেটের কাঠ থেকে শুরু করে সব গ্যাজেটসের রক্ষণাবেক্ষণ মুশকিল হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: এমন ড্রেসিং টেবিলেই খুলবে ঘরের সাজ!
আরও পড়ুন: ঘরের মধ্যেই সমুদ্রতট! সঙ্গে থাকবে দোলনাও
যখন রান্নাঘরকে নতুন করে সাজিয়ে তুলবেন তখন আগেই সব প্লাগ পয়েন্ট চেক করে নিন। বিভিন্ন আধুনিক ইলেক্ট্রিক্যাল গ্যাজেটস— ইন্ডাকশন থেকে শুরু করে ওটিজি, রাইস কুকার, মিক্সি অথবা মাইক্রোওভেন এ সব শুধুই যে রান্নাঘরের শোভা বাড়ায় তা নয়, ঝটপট নানা ধরনের রান্নায় সাহায্য করে। তবে ইদানীং মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত বলে পুষ্টি বিজ্ঞানীদের অভিমত। কেননা, এতে রান্না করলে খাবারের গুণ নষ্ট হয়ে যায়। আর রান্নাঘরের জানলায় যদি একটু সবুজের ছোঁয়া থাকে তা হলে আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এক চিলতে রান্নাঘর। ছোট্ট সুদৃশ্য টবে লাগান ধনেপাতা, কারিপাতা, দিল, বেসিল ইত্যাদি হার্বস। পুজোর সময় নিজেদের নতুন পোশাকের মাঝেই অল্প খরচে নতুন রূপ দিন রান্নাঘরকে।