খুকুমণি আলতা ও সিন্দুর
সিঁথি ভর্তি লাল রঙা সিন্দুর, পায়ে লাল আলতা — যে কোনও বিবাহিতা বাঙালির সাজে এই দু’য়ের অবদান এক কথায় অনস্বীকার্য। ঐতিহ্যগত ভাবে হোক বা বিশ্বাস, সিন্দুর ও আলতার ব্যবহার বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে।
বাংলা সংস্কৃতির পটচিত্রে বিবাহিতা নারীর সকল ভূষণেরই অপরিহার্য অঙ্গ হল সিন্দুর। আজও সকলে মিলে টুকটুকে পায়ে আলতার টানে নিজেকে সাজিয়ে তোলার রেওয়াজের দৃশ্যের জুড়ি মেলা ভার! সে উৎসবের আবহে মেতে ওঠা হোক, বা পরিবার কল্যাণের অপার বিশ্বাস-এ। সিন্দুর আলতার সঙ্গে বিবাহিতা নারীর এই বন্ধনকে ভালবাসার রঙে রাঙিয়ে সযত্নে পালন করা হয় আবহমানকালের ঐতিহ্য হিসেবে। মাঙ্গলিক রূপে আলতা সিন্দুর বিবাহিত নারীদের পরম্পরা চিরকালীন।
সেই পরম্পরাকে সঙ্গী করেই দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে, বাংলা ও বাঙালির পরিবারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জুড়ে রয়েছে খুকুমণি আলতা ও সিন্দুর। মা-কাকিমা হোক বা সদ্য বিবাহিতা নারী সবার সাজের শেষেই তাঁদের রূপকে নিমেষে অনন্যা করে তোলার সামগ্রী হিসেবে তাঁদের সাজের বাক্সে ঠাঁই পেয়েছে খুকুমণি আলতা ও সিন্দুর। এই আধুনিক যুগে নানা বিবর্তনের মধ্যেও আলতা, সিন্দুরের গুরুত্ব একইভাবে প্রাসঙ্গিক। আজও সেই অটুট বিশ্বাসে বিবাহিত নারীরা এই ঐতিহ্যকে সম্মানের সঙ্গে বয়ে নিয়ে চলেছেন। আর তার সাক্ষী রয়েছে খুকুমণি।
ষষ্ঠীর দিন থেকেই পুজোর শুভারম্ভ। ঘটে সিন্দুরের স্পর্শে মাঙ্গলিক পর্বের সুচনা। বিবাহিত মহিলাদের কাছে সিন্দুর, আলতা সংস্কার ছাড়াও বিশেষ পছন্দের প্রসাধন। ষষ্ঠীর দিন সালোয়ারের সঙ্গে মাথায় হালকা সিন্দুরের ছোঁয়া ভালোই মানাবে। আবার সপ্তমীর জমকালো শাড়ির সাজে তেমনই সিঁথিতে চওড়া সিন্দুরের টান ভাল লাগবে। অষ্টমীর অঞ্জলিপর্ব বিরাট ব্যপার। সকালে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে অঞ্জলির লম্বা লাইনে বিবাহিতা মহিলারা লাল পাড়ের সাদা গরদ বা ঢাকাই শাড়ি পরে মাথায় লম্বা করে সিন্দুর দিয়ে ভক্তি ভরে অঞ্জলি প্রদান করেন।
মাথায় উজ্জ্বল সিন্দুরের শোভা খুবই মাঙ্গলিক। সন্ধ্যায় রয়েছে ধুনুচি নাচের পর্ব। এখানে জমায়েত বিবাহিতা মহিলারা কেউ বা মুগ্ধ হয়ে আরতি নাচ উপভোগ করেন কেউ বা উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে এসে অংশগ্রহণ করেন ধুনুচি নাচে। মহিলারা ব্যবহার করে থাকেন উজ্জ্বল সিন্দুরের গুঁড়ো। পায়ে থাকে নিপুণ হাতে আঁকা আলতার টান। আলতা পরার রীতিতেও কিছু কিছু পরিবর্তন এসেছে। প্রথাগত ছাড়াও দৃষ্টিনান্দনিক ভাবে নিপুণ হাতে হরেক রকমের ডিজাইন পায়ে শোভা বৃদ্ধি পায় আজ বিবাহিত মহিলাদের। হাতের তালুতেও আলতা দিয়ে রাঙানো আজ রেওয়াজে দাঁড়িয়েছে ফ্যাশনে। কতকটা মেহেন্দির বিকল্প হিসেবে।
বিজয়া দশমী চলে আসে দেখতে দেখতে। দশমীতে সিন্দুর খেলার রেয়াজ বিবাহিতা মহিলাদের মধ্যে ঘরে ঘরে, ক্লাবে, ক্লাবে। এই অপূর্ব দৃশ্য ঐতিহ্যের সাক্ষী।
খুকুমণির লিক্যুইড সিন্দুর আজ প্রতিটি বিবাহিত নারীর পছন্দ কারণ এই সিন্দুর যেমন পরা সহজ তেমনি সহজে গলে যায় না। ফলে কপালে সুন্দর ভাবে শোভা পায় ও জ্বলজ্বল করে। তাই সপ্তমী ওয়েস্টার্ন ড্রেসে হোক বা নবমী ট্যাডিশনাল শাড়ি, সবেতেই এই লিকুইড সিন্দুর খুব ভাল মানায়।
খুকুমণি আলতা ও সিন্দুর আজও সবার প্রিয়
ত্বকের যত্নের কথা মাথায় রেখে খুকুমণি বিশেষভাবে তৈরি করে আলতা সিন্দুর যাতে কোনরকম ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকে। তাই এই খুকুমণিরই আলতা সিন্দুর সবার প্রথম পছন্দ - কি নিজের ব্যবহারের জন্যও, কাউকে দিতে বা মায়ের পুজোর অর্ঘ্য হিসেবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘খুকুমণি’র সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।