প্রতীকী চিত্র
নতুন জামা, জুতো, পুজাবার্ষিকীর পাশাপাশি পুজোতে নির্মেদ ফিট চেহারায় নতুন হয়ে ওঠার সাধ হয় অনেকেরই। জমিয়ে আনন্দের পাশাপাশি বন্ধুদের দলে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতেও চান কেউ কেউ। অতএব চলো জিম! কিংবা আরও নানা ভাবে শরীরচর্চায় মনোযোগ বাড়ে এ সময়টায়। কিন্তু এই স্বল্পমেয়াদী শরীরচর্চা পর্বে আদৌ কোনও লাভ হয় কি? কখন কোন ব্যায়াম করলে কী উপকার হবে, কী করলে লাভের থেকে ক্ষতি বেশি, কী করলে পরবর্তীতে উপকার পাবেন- তেমনই কিছু পরামর্শ দিলেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়।
চিন্ময়ের মতে, ফিটনেস একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অল্প সময়ে খুব দ্রুত টোনড ফিগার পাওয়া সম্ভব নয়। তবে শুরুটা যে কোন সময়েই করা যায়। সারা বছর যাঁরা কিছু না কিছু ব্যায়াম এবং শরীর চর্চার মধ্যে থাকেন, তাঁরা সুস্থ ও ফিট থাকেন। কিন্তু পুজোর ঠিক আগেই যাঁরা শর্টকাট প্রক্রিয়ায় সুন্দর শরীর পেতে চান, তাদের জন্য কিছু টিপস দিয়েছেন তিনি।
১। এখন জগিং বা রানিং শুরু করলে পুজোর আগে খুব বেশি লাভবান হবেন না ঠিকই কিন্তু দমের উন্নতি হবে। এই সময়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেললে বা হতাশ হলে চলবে না। দৌড়লে বা হাঁটলে আপনার ঘাম ঝরবে। এই হাঁটা বা দৌড়নো কিন্তু ঘাম ঝরানোর মতোই করতে হবে। তবেই কিছু ক্যালরি বার্ন হবে।
২। যাঁরা আবাসন কমপ্লেক্সে থাকেন যেখানে সাঁতার বা সাইক্লিং করার মতো সুযোগ আছে, সেই সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারে। সাঁতার এমন একটি ব্যায়াম, যা সারা শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঞ্চালনে সহায়ক। সাঁতারে বডি টোনড হয় খুব ভাল। পাশাপাশি আধ ঘণ্টা সাইকেল চালালে প্রচুর ক্যালোরি বার্ন হয়। পুজোর আগে হাতের কাছে থাকা এই দু’টি ব্যায়াম আপনার স্বাস্থ্যের সহায়ক হবে।
৩। যারা রোজ জিমে যেতে পারেন না, তাঁদের জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছু ফিটনেস ব্যায়াম রয়েছে। যেমন ওয়াল স্কোয়াট। ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই এই ব্যায়াম খুব উপকারী। দেওয়ালে হেলান দিয়ে নীচে কোনও রাবারের বল রেখে বারবার তার উপর বসা এবং উঠে দাঁড়ানো। যাঁদের কাছে বল নেই, তাঁরা পিছনে একটা চেয়ার রেখে এই ব্যায়াম করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, এই স্কোয়াট-এর সময়ে বারবার আপনার হিপ যেন চেয়ার স্পর্শ করে। এতে হাঁটুর পেশির জোর বাড়ে।
৪। পেটের মেদ বা চর্বি কমাতে কিছু সাধারণ ব্যায়াম রয়েছে। যেমন- প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ডেড বাগ, বার্ড ডগ। ২০-৩০ সেকেন্ড করে এগুলো করা যায় রোজ। এতে আপনার মাংসপেশীর জোর বাড়বে, সঙ্গে মেদও ঝরবে।
৫। ঘরে ডাম্বল কিনে সহজ কিছু শরীরচর্চা করতে পারেন সকলেই।
ব্যায়াম-সহ যে কোনও ধরনের শরীরচর্চার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে সমানতালে। সঙ্গে চাই সুস্থ জীবনধারা। ফ্যাটযুক্ত খাবার, যেমন ময়দা বা তেল খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। তা না হলে ব্যায়ামের সুফল দেখা যাবে না আপনার শরীরে। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল, ফল খেতে হবে। জলের মাধ্যমে শরীরের বর্জ্য পদার্থ নির্গত হয়। শরীর সুস্থ থাকে। জলীয় ফল যেমন তরমুজ, মুসম্বি ইত্যাদি খেতে হবে নিয়মিত। এগুলির খাদ্যগুণ আপনাকে পুষ্টি জোগাবে। পরিমিত ঘুম, সুস্থ জীবনযাপনই আপনাকে দিতে পারে সুস্থ শরীর। তাই পুজোয় হই হুল্লোড়ের পাশাপাশি ভিতর থেকে সুস্থ থাকতে গেলে জীবনযাপনের দিকে নজর দেওয়া ভীষণ ভাবে জরুরি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।