‘ইশ, ডবল চিন! একটা সেলফিও ভাল আসবে না!’ ‘কী রে ভাই, ভুঁড়িটা একটু কমা এ বার।’ - সব সমালোচনাকে পাশে সরিয়ে এগিয়ে চলুন সুস্থ থাকার লক্ষ্যে।
সারা বছর রসেবশে থাকলেও, পুজোর আগে শরীর সচেতন হয়ে উঠতে চেষ্টা করে বাঙালি। নারী পুরুষ উভয়েই। কিন্তু সারা বছর যদি পর্যাপ্ত ডায়েটের সঙ্গে কিছু ক্ষণ যোগাভ্যাস করা যায়, তা হলে ভিতর থেকেই সুস্থ থাকা যায়, রোগমুক্ত থাকা যায়।
আসলে সার্বিক সুস্থতার মূল কথা হল যোগা। দেখে নেওয়া যাক, কোন যোগাসনে ওজন কমে ও কী কী রোগের উপশম হয়।
পশ্চিমুত্তাসন : দু’পা একসঙ্গে সামনে রেখে বসে পড়তে হবে। পায়ের পাতা সমান্তরাল রেখে থাই, হাঁটু, কাফ মাসেল শক্ত করে রাখতে হবে। তার পরে শ্বাস টানার সঙ্গে দু’হাত উপরে তুলে অ্যাক্সেলের সঙ্গে সামনে ঝুঁকে পা ছুঁতে হবে। এ ভাবেই তিন বার শ্বাস নিন। উপকার : হিপ জয়েন্ট সচল হয়। কিডনি সুস্থ থাকে। হ্যামস্ট্রিং-এর শক্তি এবং সক্ষমতা বাড়ে।
বদ্ধাকোণাসন : দু’পায়ের পাতা একসঙ্গে রেখে হাঁটু ভাঁজ করে ম্যাটে বসুন। শ্বাস টেনে দু’হাত উপরে তুলে অ্যাক্সেলের সঙ্গে সামনের দিকে ঝুঁকুন। মাথা মাটিতে ছুঁতে হবে। এ ভাবেই তিন বার শ্বাস নিন। উপকারিতা : কোমরকে সচল করে। কিডনি সুস্থ রাখে। পিসিওডি, পিসিওএস কমায়। হিপ জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়ায়।
উপবিষ্টাকোণাসন: ম্যাটে দু’পা সামনের দিকে যথাসম্ভব ছড়িয়ে বসতে হবে। শ্বাস টানার পাশাপাশি দু’হাত উপরে তুলে এক্সেলের সঙ্গে সামনের দিকে ঝুঁকে দুপায়ের বুড়ো আঙ্গুল ছুঁয়ে দেখুন। উপকারিতা : হ্যামস্ট্রিং নমনীয় হয়। পায়ের মাসল টোনড করে, পিসিওডি, পিসিওএস কমাতে সাহায্য করে। পিরিয়ডের ব্যথা কমায়। পেলভিক রিজিয়নে রক্তচলাচল বৃদ্ধি পায়।
উষ্ট্রাশন : ম্যাটের উপরে হাঁটু গেড়ে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। হাঁটু ও গোড়ালি দুটো খোলা থাকবে যথাসম্ভব। তার পরে কাঁধ থেকে হাত ঘুরিয়ে পায়ের গোড়ালি ধরতে হবে। শিরদাঁড়া টানটান রাখতে হবে। উপকারিতা: শরীর সুঠাম করে, থাইরয়েড কমায়। পেশীর নমনীয়তা বাড়ে।
শশঙ্গাসন : ম্যাটে হাঁটু গেড়ে বসতে হবে। হাঁটু ও গোড়ালি এক লাইনে থাকবে। মাথা হাঁটুতে ছুঁয়ে থাকবে। হাত দুটো থাকবে গোড়ালিতে। তার পরে অ্যাক্সেলের সঙ্গে শরীর দিকে ঝোঁকাতে হবে। উপকারিতা : শিরদাঁড়া নমনীয় হয়, থাইরয়েড কমে যায়। শরীর সুঠাম হয়।
ভুজঙ্গাসন : পেট নীচের দিকে রেখে ম্যাটে শুয়ে পড়তে হবে। হাত দুটো থাকবে কাঁধের দু’পাশে। তার পর শ্বাস টেনে কাঁধ ধীরে ধীরে মাটি থেকে তুলে নিতে হবে। উপকারিতা: থাইরয়েড ও প্যারাথাইরয়েড কমায়। কোমর ও শিরদাঁড়ার এর নমনীয়তা বাড়ে। হজম ঠিক হয়।
ধনুরাসন: ম্যাটের উপরে পেট নীচের দিকে রেখে শুয়ে পড়তে হবে। হাঁটু ভাঁজ করে দু’হাত দিয়ে গোড়ালি দুটো ধরতে হবে। শ্বাস টানার সঙ্গে নাভি মাটিতে ছুঁয়ে রেখে পুরো শরীর তুলে ধরতে হবে। উপকারিতা : শিরদাঁড়া নমনীয় করে। অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত চলাচল বাড়ায়। শরীর সুঠাম করে।
চক্রাসন: পিঠ নীচের দিকে রেখে ম্যাটে শুয়ে পড়তে হবে। তার পর হাঁটু দুটো ভাঁজ করে হিপের কাছে আনতে হবে। হাত দুটো ভাঁজ করে কাঁধের নীচে রাখতে হবে। হাতের মধ্যমা পায়ের দিকে থাকবে। শ্বাস টেনে পুরো শরীর তুলে ধরতে হবে। উপকারিতা: শরীর সুঠাম করে। সক্ষমতা বাড়ায়। সায়াটিকার ব্যথা কমায়।
হলাসন : পিঠ নীচে রেখে ম্যাটে শুয়ে পড়তে হবে। তার পরে হাত মাটিতে রেখে অ্যাক্সেলের সঙ্গে পা দুটোকে ধীরে ধীরে শিরদাঁড়ার জয়েন্ট মাথার উপর দিয়ে নিয়ে মাটি ছুঁতে হবে। উপকারিতা :ঘাড়, কাঁধ, হাতের শক্তি বাড়ে। শরীর সুঠাম করে। শিরদাঁড়ার নমনীয়তা বাড়ে।
সর্বাঙ্গাসন : পিঠ নীচের দিকে রেখে শুয়ে পড়তে হবে। তার পরে হাত দুটো কোমরে ভর দিয়ে পা দুটোকে ধীরে ধীরে তুলে নিতে হবে। কাঁধ, কোমর, পা সরল রেখায় থাকবে। উপকারিতা :রক্ত উল্টো দিকে প্রবাহিত হয়। শরীর সতেজ থাকে। শিরদাঁড়ার শক্তি বাড়ে। ত্বক ও চুল ভাল হয়।