‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চলছে কারও। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবায় যুক্ত হওয়ায় কারও বা অফিস যেতে হচ্ছে রোজই। পুজো মানেই যে দেদার ছুটি মিলেছে, এমন কিন্তু না। কাজের রুটিন যা-ই থাক, করোনা আবহে সবথেকে বড় চিন্তা স্যানিটাইজেশন। পুজোর আবহে অনেকেই দেবতার ভোগেও ফল দেন। খিচুড়ির সঙ্গে থাকে পাঁচমিশেলি সব্জি। তাই ফল-সব্জি ধোওয়ার হাত থেকে পুজোর আবহেও নিস্তার নেই। বরং বেশি পরিমাণে কেনার ফলে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে স্যানিটাইজেশনের ক্ষেত্রে। সাবান বা জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কচলে হাত ধুলে হাতের তালুর প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ জীবাণুকে তো মেরে ফেলছেন, কিন্তু বাইরে থেকে আসা ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে কী করবেন? তা থেকে সংক্রমণ হতে পারে কি?
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মত, ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করাই ভাল। তবে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। সংক্রমণ এড়াতে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চললেই হবে।
১. যে সমস্ত ফল বা সব্জি কয়েক দিন রেখে ব্যবহার করা যায়, যেমন আলু, পেঁয়াজ, আদা, নারকেল, ন্যা
আরও পড়ুন: করোনা থেকে সেরে উঠেছেন? পুজোর সময় কী কী খেয়াল রাখবেন?
২. কোনও কোনও ক্ষেত্রে সব্জি সাবান জলে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শুকনো করে মুছে রেখে দিতে হবে।
৩. অনেক সব্জির ক্ষেত্রে আবার সাবান জলে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া হয়। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক হল পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ বা পটাস জলে সব্জি ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে রেখে দেওয়া।
৪. সব্জি ধোওয়ার আগে নিজের হাত ভাল করে সাবান দিয়ে কচলে ধুয়ে নিতে হবে। সাবান বা জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কচলে হাত ধুলে হাতের তালুর প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ জীবাণু মরে যায়। তার পর সব্জি ধুতে হবে।
৫. পেঁয়াজ, আলু, আপেল, কমলালেবু
যে বাক্সে আসছে সেটি স্যানিটাইজ করে তার পর বাক্সটি খুলুন
আর কী মনে রাখতে হবে
বাজার থেকে সব্জি নিয়ে এলে
• বাড়ির বারান্দায় বা ফ্ল্যাট হলে দরজার মুখেই দু’টি বালতি রেখে দিন। একটি ফাঁকা বালতি থাকবে। একটি মগে সাবান জল থাকবে। সাবান জল বা পটাস জল থাকবে একটি বালতিতেও। মগের সাবান জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিয়ে ফাঁকা বালতিতে ফেলুন। মগটি যেখানে ধরেছেন সেটিও সাবান জলে পরিষ্কার করে নিন। অন্য বালতিতে থাকা পটাস জল বা সাবান জল দিয়ে সব্জি পরিষ্কার করে কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
• বাজারে কাপড়ে ব্যাগ ব্যবহার করুন, যাতে সেটি সাবান দিয়ে সম্পূর্ণ কেচে নেওয়া যায়।
অনলাইন সব্জি বা ফল এলে
যে বাক্সে আসছে সেটি স্যানিটাইজ করে তার পর বাক্সটি খুলুন। বাক্সটি ফেলে দিন। ফল বা সব্জি তার পর পটাস জল বা সাবান জলে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড়ে মুছে রেখে দিন। প্রয়োজনে দু’দিন বা তিন দিন রেখেও বাক্সটি খোলা যেতে পারে, কিন্তু সে ক্ষেত্রে সব্জি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, জানান সুবর্ণবাবু।
বাজার চলতি ভেজিটেবল ক্লিনার বা ফ্রুট ক্লিনারে কাজ হবে?
সাবান জল বা বেকিং সোডা ব্যবহার করা যেতে পারে ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে। ক্লিনারও ব্যবহার করা যায়। তবে বেকিং সোডা বা সাবান ব্যবহার করাই ভাল। জল দিয়ে ধোওয়ার পর গরম জলে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে ফল, সব্জির গা ভাল করে মুছে নিন। এতে যদি ধোওয়ার পরও কিছু লেগে থাকে তা উঠে যাবে।
সব্জি ঠান্ডা রানিং ওয়াটারে পরিষ্কার করলেই হবে
আর কী মনে রাখতে হবে
পেঁয়াজ, আলু, আপেল, কমলালেবু, আ
হোমমেড ক্লিনিং স্প্রে
এক টেবল চামচ লেবুর রস ও দুই টেবল চামচ বেকিং সোডা ভাল করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ এক কাপ জলে মিশিয়ে পাতলা করে নিন। বোতলে ভরে ঠান্ডা কোনও জায়গায় রেখে দিন। ফল, সব্জির গায়ে স্প্রে করে নিন।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে বাড়িতে অতিথি? কী কী খেয়াল রাখতেই হবে
যদিও এ ক্ষেত্রে খানিকটা ভিন্নমত পোষণ করেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর কথায়, হাত সাবান জলে কচলে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তার পর সব্জি ঠান্ডা রানিং ওয়াটারে পরিষ্কার করলেই হবে। অযথা আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। তবে সব্জির মধ্যে কেউ হাঁচলে-কাশলে সেই ড্রপলেট থেকে সংক্রমণ হতে পারে, তবে সেই আশঙ্কা খুবই কম। সব্জি ভাল করে পরিষ্কার করে আবারও হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে সাবান জলে।