শুরুটা হয়েছিল তিরিশ বছর আগে। উদ্দেশ্য ছিল কবিতা, সাহিত্যকে তাঁদের কাছে পোঁছে দেওয়া, যাঁরা এ রসে বঞ্চিত। বাংলা সাহিত্যকে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই অভিনব পরিকল্পনায় চৈতালি দাশগুপ্ত সে দিন পাশে পেয়েছিলেন কবি-সাহিত্যিকদের। টি-শার্টে লেখা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা দিয়ে শুরু হয়েছিল ‘শ্রাবস্তী’র পথচলা।
সেই প্রথম চৈতালি দাশগুপ্তর হাত ধরে বাংলা কবিতা পরিখা পেরিয়ে জায়গা করে নিল বাঙালির ওয়ার্ডরোবে। পাঞ্জাবি, কুর্তি, শাড়িতে কবিতা লেখা ‘পদ্য পোশাক’ হয়ে উঠল চৈতালির অভিনব উদ্যোগ। যে স্বপ্নের পথ ধরে ‘শ্রাবস্তী’ সম্প্রতি পার করেছে তিন দশক।
‘শ্রাবস্তী’র সঙ্গে আত্মিক যোগ বিদীপ্তা ও সুদীপ্তার চক্রবর্তীর। পুজোর কেনাকাটায় ‘পদ্য শাড়ি’, পদ্য পোশাক’ থাকবেই। প্রতি বছর পুজোয় বাইরে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান থাকে বিদীপ্তার। এ বছরটা অন্য রকম। কলকাতায় থাকছেন অভিনেত্রী।
অন্য দিকে পুজোয় কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে মন চায় না সুদীপ্তার। প্রতি বছর পুজো কাটে গল্ফ ক্লাব রোডে। এ বার দিদি বিদীপ্তাও কলকাতাতেই। দু’জনের জমিয়ে আড্ডার প্ল্যান। বহু দিন পরে আবার একসঙ্গে ছোটবেলার স্মৃতিগুলোকে উসকে দেওয়ার সুযোগ।
অন্য দিকে পুজোয় কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে মন চায় না সুদীপ্তার। প্রতি বছর পুজো কাটে গল্ফ ক্লাব রোডে। এ বার দিদি বিদীপ্তাও কলকাতাতেই। দু’জনের জমিয়ে আড্ডার প্ল্যান। বহু দিন পরে আবার একসঙ্গে ছোটবেলার স্মৃতিগুলোকে উসকে দেওয়ার সুযোগ।
প্যান্ডেলের বাঁশ বাঁধা থেকে শুরু করে প্রতিমা বিসর্জন- দুই বোনের ছোটবেলার শারদীয়া ছিল আবাসনের পুজোকে ঘিরে।
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, সকাল থেকে মণ্ডপে কাটানো, প্রতিটা মুহূর্ত জমিয়ে উপভোগ করতেন দুই বোন। বড় হয়ে দু’জনেই এখন ব্যস্ত অভিনেত্রী। তবু পুজোর সময়ে আজও আড্ডা বসে। হাসি ঠাট্টা, খুনসুটিতে সময় কাটে।
পুজোর চার দিনে হাল্কা পোশাকই পছন্দ দু’জনের। তবে এক দিন শাড়ি পরতেই হবে। সি-গ্রিনের ওপর সহজ পাঠের মোটিফ করা কুর্তা পরেছেন বিদীপ্তা। গলায় ম্যাক্রমের লম্বা হার। সুদীপ্তার পছন্দ রবি ঠাকুরের কবিতা লেখা হলুদ কুর্তি। বুকের কাছে রামকিঙ্কর বেজের পেন্টিংয়ের অনুসরণে আঁকা মোটিফ। হাতে আকাশ নীল ও হলুদ রঙের কাঠের বালা। একেবারে জমাটি আড্ডার পোশাক।
পাড়ায় দুপুরের বৈঠক বা সন্ধেয় বাড়ির মজলিশি মেজাজে হাল্কা শাড়িতে স্বচ্ছন্দ দু’জনেই। সুদীপ্তা বেছে নিয়েছেন শ্রাবস্তীর বাটিক-কাঁথা শাড়ি। ক্র্যাক করা বাটিকের পাড় ও আঁচলে কালো বাটিকের ফুলেল নকশা। বিদীপ্তার পছন্দ হলুদ পাড়ের অফ-হোয়াইট হ্যান্ডলুম শাড়ি, তাতে নবনীতা দেব সেনের কবিতার পংক্তি।
একান্তে দুই বোন। হাসি-ঠাট্টা, খুনসুটিতে যেন ফিরে পাওয়া মেয়েবেলা। বোনের সঙ্গে মশকরায় মেতেছেন বিদীপ্তা। আতস কাঁচে দেখতে চান সুদীপ্তার হাতের রেখা। কেমন হবে ভবিষ্যৎ! হাসতে হাসতে বোনের পাল্টা জবাব-‘নতুন কী বলবি? সে তো সবাই জানে!’’ অফ-হোয়াইট তুঁতের কম্বিনেশনের তসর শাড়িতে ঝলমলে সুদীপ্তা। তাতে রবীন্দ্রনাথের কবিতা লেখা। গলায় মানানসই ম্যাক্রমের হার। বিদীপ্তা অনন্যা শঙ্খ ঘোষের কবিতা লেখা জড়িপাড় কালো শাড়িতে।
মডেল: বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সুদীপ্তা চক্রবর্তী পোশাক ও গয়না: শ্রাবস্তী রূপটান ও কেশসজ্জা: বাবুসোনা সাহা ছবি: তীর্থঙ্কর দাস স্থান: শ্রাবস্তী পরিকল্পনা: শ্যামশ্রী সাহা