পুজো মানেই বাঙালির কাছে এক রাশ ব্যস্ততা। গোটা পরিবারের জন্য জমিয়ে কেনাকাটা। নতুন সাজে সেজে ওঠার প্রস্তুতি।
আসলে শহর মাতৃআরাধনায় মেতে ওঠে পাঁচ দিনের জন্য। কিন্তু সেই রেশ শুরু হয়ে মাস খানেক আগেই। ষষ্ঠী বোধন থেকে দশমীর বিদায়বেলা, কোনদিন কোন সাজ থাকবে তার পরিকল্পনা সেরে ফেলা হয় অনেক আগে থেকেই। তাই ফ্যাশন লিস্টে কী থাকবে সেই নিয়ে নো-কম্প্রোমাইজ।
মহিলাদের কাছে পুজোর ফ্যাশনে রাখতেই হবে রকমারি শাড়ির বাহার। চান্দেরী না মাহেশ্বরী? না কী কোষা শাড়িতে সেজে উঠবেন? একই সঙ্গে পুরুষদের সাজের পছন্দে প্রথমে রাখবেন কোন ফ্যাশনকে? চিন্তা নেই, সব প্রশ্নের উত্তর দিতে শারদ সাজের ফ্যাশন নিয়ে হাজির দক্ষিণাপণের মৃগনয়নী এবং উত্তরাপণের অবন্তী।
ষষ্ঠী মানে পুজোর শুরু। হালকা কাজ করা কাঠের ব্লক দিয়ে তৈরি মৃগনয়নীর বাগ প্রিন্টেড শাড়িতে প্রথম দিনেই হয়ে উঠতে পারেন নজরকাড়া। বাগ প্রিন্টের এই শাড়িগুলি মধ্যপ্রদেশের ধার জেলার নিজস্ব নিদর্শন। এই শাড়িতে ব্যবহার করা হয় অর্গানিক রং। জ্যামিতিক আকারে তৈরি হয় শাড়ির মোটিফগুলি ষষ্ঠীর দিন খানিকটা অন্য ঘরানার স্বাদ দিতেই পারে।
সপ্তমীর সাজে রাখতে পারেন এক সময়ের মারাঠা রানিদের প্রথম পছন্দের মাহেশ্বরী শাড়িকে। আর সোনালি জরির নিপুণ কারুকার্যে মোড়ানো সিল্ক ও সুতির তৈরি মাহেশ্বরী শাড়ি। এই শাড়ির আরও উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ‘রিভারসেভেল’ পাড়। অর্থাৎ দু’দিক করেই মাহেশ্বরী শাড়ি পরা যায়। সপ্তমীতে মৃগনয়নীর মাহেশ্বরী শাড়িই এক লহমায় আপনার সাজকে করে তুলবে আরও রাজকীয়।
অষ্টমী মানেই ভারী সাজ। তাই, অষ্টমীর সাজে থাক মৃগনয়নীর আরও এক উল্লেখযোগ্য সম্ভার কোষা শাড়ি। অর্জুন, সাল, সাজা গাছের উপর জন্মানো গুটিপোকা থেকে তৈরি ভিন্ন ধরনের তসর সিল্ক হল কোষা শাড়ি। বাদামী, ফ্যাকাশে সোনালি কিংবা কমলা, যে কোনও রঙে বিশ্বের সেরা রেশম শাড়িতেই মণ্ডপের মধ্যমণি হয়ে উঠুন অষ্টমীর দিন।
নবমীর সাজে রাখতে পারেন, মৃগনয়নীর গাদোয়াল, কলমকারি, কাঁথা স্টিচ করা বিভিন্ন রকমারি শাড়িকে। এই শাড়িগুলির সঙ্গে মানানসই ব্লাউজের সম্ভারও পেয়ে যাবেন এই মৃগনয়নীতেই।
দশমী মানেই মাকে বিদায় জানানোর পালা। আরও এক বছরের অপেক্ষা। সাদা-লাল পাড় দেওয়া চান্দেরী শাড়িতেই হোক এই বছরের সিঁদুর খেলা। মুঘল সম্রাজ্ঞীদের সময় থেকে এখনও পর্যন্ত মৃগনয়নীর চান্দেরী শাড়ি মহিলাদের পছন্দের তালিকায় সেরা হয়ে রয়েছে। এই শাড়ি অত্যন্ত মখমল ও মসৃণ। দশমীর সকালে মৃগনয়নীর শাড়িই থাক বিজয়ার শুভেচ্ছায়।
মৃগনয়নীতে যেমন রয়েছে শাড়ির সম্ভার, তেমনই রয়েছে নানান গয়নার বাহারও। পার্ল থেকে অক্সিডাইজ, সিলভার-ট্রাইবাল গয়না পাবেন দক্ষিণাপণের মৃগনয়নীতে। এছাড়াও রয়েছে, আংটি, হাতের বালা এবং কানের দুলের বিভিন্ন কালেকশন। সঙ্গে অন্দরসজ্জাকে সাজিয়ে তুলতে থাকছে ডোকরা টেরাকোটার সম্ভারও।
পুজোর সাজে দক্ষিণাপণের মৃগনয়নীর সাজের তালিকায় বাদ পড়েনি পরুষদের পোশাকও। হ্যান্ডলুম শার্ট, কুর্তা, পাঞ্জাবি এর অভিনব কালেকশন নজর কাড়বে বয়স্ক থেকে যুবক প্রত্যেকেরই। সুতরাং, পুজোর শপিংয়ে আর দেরি নয়। এই পুজোয় সাজের বাহারে নতুনত্বের ছোঁয়া আনতে অবশ্যই আসতে হবে দক্ষিণাপণের মৃগনয়নী এবং উত্তরাপণের অবন্তীতে।