আলোর উৎসব, ফুলঝুরির রাত। দোরগোড়ায় এসে হাজির। রাত পোহালেই কালীপুজোর হইচই!
কিন্তু শত ব্যস্ততাতেও এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না কী পরবেন বা কী সাজবেন? নজরে থাকুক বেশ অন্য রকম কিছু ভাবনা। আপনার ভাবনায় শান দিয়ে দিচ্ছেন পোশাকশিল্পী পরমা ঘোষ।
পরমা জানালেন, “প্রথমেই বলি, গত কয়েক বছরে ফ্যাশন জগতে যে সতর্কতা বারবার উঠে এসেছে, তা হল বাজি পোড়ানো হোক কী না হোক, আগুনের ফুলকি ও আলোর রোশনাইকে ঘিরে যে উৎসব, সেখানে জর্জেট বা সিফন জাতীয় পোশাক না পরে সুতির পোশাক, শাড়ি ইত্যাদি পরা উচিত। শুধু তারকাদের ছবি দেখেই জরি, চুমকি দেওয়া জর্জেট না পরে সুতিকেই আমি মান্যতা দিই বেশি। "
তাঁর মতে, “সুতির কাপড়ের উপর মিরর ওয়র্কের বা কচ্ছ নকশা, যাকে বলে জমকালো শাড়ি, এমনটা বেছে নিতে পারেন। কালো বা গাঢ় রং অবশ্যই দীপাবলির জন্য প্রথম পছন্দ হতে পারে। শাড়িতে থাকুক জরির পাড়"।
ব্লাউজের ক্ষেত্রে শুধু সাবেকি বা গলা উঁচু ব্লাউজের হালফ্যাশন থেকে সরে এসে বেশ ডিপকাট ব্লাউজ বা স্লিভলেস, রেসারব্যাক ব্লাউজ পরুন এই কালীপুজোয়।"
পরমা বলছেন, “নিজে মা হওয়ার পরে আমি শুধু গলা, পিঠ ঢাকা ব্লাউজের বাইরেও ভাবতে শিখেছি। তাই ডিপকাট ব্লাউজ অবশ্যই পরুন। আমি বলব, যাঁদের মধ্যে একটু কিন্তু-কিন্তু ভাব রয়ে গিয়েছে এই পোশাক নিয়ে, তাঁরাও ফ্যাশন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখুন দীপাবলিতে, ফাটাফাটি লাগবে।"পরমা বলছেন, “নিজে মা হওয়ার পরে আমি শুধু গলা, পিঠ ঢাকা ব্লাউজের বাইরেও ভাবতে শিখেছি। তাই ডিপকাট ব্লাউজ অবশ্যই পরুন। আমি বলব, যাঁদের মধ্যে একটু কিন্তু-কিন্তু ভাব রয়ে গিয়েছে এই পোশাক নিয়ে, তাঁরাও ফ্যাশন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখুন দীপাবলিতে, ফাটাফাটি লাগবে।"
তবে শীত যেহেতু চলেই এসেছে, সন্ধের পর থেকে বাতাসে রীতিমত হিম পড়া শিরশিরে ভাব, তাই পরমা বলছেন, “ডিপনেক ব্লাউজ যেন পুরো হাতা বা অন্তত গ্লাস হাতা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। এতে রং যতই খুশি জমকালো হোক ক্ষতি নেই। আর ব্লাউজে কাঁচের কারুকাজ থাকলে তো কথাই নেই। "
কালীপুজোর সাজ মানেই চোখ ধাঁধানো আলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রঙিন, গাঢ় রঙের সাজ। রানি গোলাপি রং, সোনালি বা রুপোলি ব্রোকেডের ব্লাউজ আদর্শ এই সাজের জন্য।
যেমন, এক ঢালা শাড়ির সঙ্গে চুমকি, সিক্যুইনের বা ভারী জারদৌসি জমকালো ব্লাউজ দিব্যি মানাবে। এ ছাড়া কেউ খুব অভিজাত সাজতে চাইলে আজরাখের প্যাচ ওয়র্কের ব্লাউজ বা জ্যাকেটের মতো ধাঁচের ব্লাউজ পরুন, একদম ছক ভাঙা দেখাবে। যারা সাহসী ব্লাঊজ পরতে চায়, তারা কিন্তু তাই বলে দমে যেন না যায়!
শীত শীত ভাব তো কী! ন্যুডল স্ট্র্যাপ বা ডিপ করে কাটা পিঠের ব্লাউজেই থাকুক এই বারের ফ্যাশনও। কালো ব্লাউজে ঠাসা জারদৌসি কাজ থাকলে বেছে নিন এই দিনের জন্য। একদম উষ্ণ রানী গোলাপি রঙের ব্লাউজের সঙ্গে কালো শাড়ির সাজ বোধহয় কোনও দিন পুরনো হতে পারে না। আবার একই রঙের শাড়ি ও ব্লাউজ এই বছর খুব ট্রেন্ডি।"
পরমা বললেণ, “ব্যক্তিগত ভাবে আমার পছন্দ লালের সঙ্গে মিন্ট সবুজ মিশেল। আবার লাল শাড়ি কিনলে তার সঙ্গে পরতে পারেন, সাদা, সর্ষে হলুদ,রানি গোলাপি, বেগুনী ইত্যাদি রঙের মিশেল অনন্য সুন্দর দেখায়। সঙ্গে যেন অবশ্যই জরি পাড় থাকে। নীল শাড়ির সঙ্গে পিচ ব্লাউজ বা ক্যানারি হলুদ রঙ দারুণ মানায়। আবার বটল সবুজ রঙের শাড়ির সঙ্গে স্যালমন গোলাপি ব্লাউজ পরে দেখুন, আবার একই রঙের মধ্যে দুটি আলদা শেডে শাড়ি ও ব্লাউজ দেখুন।"
সাবেকি শাড়ির সঙ্গে ডিপ গলার স্লিভলেস ব্লাউজ পরুন, একটা সাবেকি ও আরেকটি যেন আধুনিক সাজ হয়। গরদ হোক কী জামদানি সব সাজে থাকতে পারে সাহসী আধুনিক সাজের ছোঁয়া!
অনেকে জমকালো বা সাহসী সাজতে ভয় পান, অথচ দীপাবলির চেয়ে আদর্শ সময় আর কী হতে পারে সেই ভয়কে দূরে সরিয়ে রাখার!
পরমার মতে, “ওকালতি পেশার সঙ্গে একটা সময় যুক্ত থাকার কারণে মানুষের কিছু ফ্যাশন সংক্রান্ত দোনামোনা ভাবকে বুঝতে পারি। তবে জামার দাগের মতো এই ভাবনা থেকে যায়, কিন্তু ফ্যাশনদুরস্ত হয়ে উঠতে চাইলে অন্য ভাবে ভাবুন।"