কার্তিক মাস, অমাবস্যা তিথি। আলোয় মুড়ে থাকে গোটা শহর। সাড়ম্বরে পালিত হয় কালীপুজো ও দীপাবলি।
রাতভর চলে পুজো। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আতসবাজির রোশনাই। একই দিনে সন্ধ্যাবেলা বহু ঘরে পূজিত হন মা লক্ষ্মী। প্রদীপের আলোয় সেজে ওঠে ঘরের উঠোন, বারান্দা। কিন্তু এমন প্রথার নেপথ্যে থাকা কারণগুলি জানেন?
মহালয়া অর্থাৎ পিতৃপক্ষের অবসান এবং মাতৃপক্ষের শুভারম্ভ। এই সময় বিদেহী আত্মারা জল গ্রহণের জন্য মর্ত্যে আসেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, তাঁরা দীপাবলি পর্যন্ত মর্ত্যেই থাকেন।
দীপাবলির অমাবস্যা তিথিতে ফের আত্মারা ফিরে যান স্বর্গলোকে। অন্ধকারে যাতে পিতৃপুরুষদের ফিরে যেতে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই তাঁদের পথ আলোকিত করে রাখতেই ঘরে ঘরে জ্বালানো হয় প্রদীপ।
এই তিথির নাম তাই দীপান্বিতা অমাবস্যা। এই সময়ে হওয়া কালীপুজোকে তাই দীপান্বিতা কালীপুজোও বলা হয়। এর নেপথ্যেও অনেক বড় ইতিহাস রয়েছে।
জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীতে নবদ্বীপের পণ্ডিত ও নব্যস্মৃতির স্রষ্টা রঘুনন্দন দীপান্বিতা অমাবস্যায় লক্ষ্মীপুজো করার নির্দেশ দেন। এর পরে ১৮ শতকে প্রকাশিত কালী সপর্যাসে প্রথম বার এই তিথিতে কালীপুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়।
অনেকের মতে, নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশই বাংলায় কালীমূর্তি ও কালীপূজার প্রবর্তন করেন।
এর আগেও কালীপুজোর প্রচলন ছিল বাংলায়। তবে হাতে গোনা কয়েকটি পুজোই করা হত। কালীর উপাসকরা তামার টাটে কালীর যন্ত্র এঁকে বা খোদাই করে মায়ের পুজো করতেন।
এই বাংলায়, কালীপুজো মূলত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের আমলে। উনিশ শতকে কৃষ্ণচন্দ্রেরই পৌত্র ঈশানচন্দ্র ও বাংলার গুটিকয়েক জমিদারের হাত ধরে কালীপুজোর জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়।