অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী
আমার কাছে দুর্গা পুজো মানেই শিউলি ফুলের গন্ধ আর ঢাকের বাদ্যি। নিজের জায়গা ছেড়ে তাই পুজোয় কোথাও যেতে ভাল লাগে না। এ বারের পুজো আমার কাছে খুব স্পেশ্যাল। সারা জীবন মনে রাখার মতো। এর আগে অনেক গান গেয়েছি। কিন্তু পুজোর গান এই প্রথম গাইলাম।
অনেক দিন থেকেই ইচ্ছে ছিল, অনুরাগীদের কাছ থেকে অনুরোধও আসতো নিজের চ্যানেলের জন্য গান গাওয়ার। ভাল গান পাচ্ছিলাম না, হঠাৎ একটা গান ক্লিক করে গেল। ব্যস! সাত দিনের মধ্যে রেকর্ডিং, শ্যুটিং সব করে ফেললাম।
জলপাইগুড়িতে যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি। বাড়িতে গান–বাজনার পরিবেশ ছিল। প্রথাগত ভাবে কখনও গান শিখিনি, কিন্তু গাইতে পারতাম। ছোটবেলার সেই সুপ্ত ইচ্ছা পূরণেই গানটা গেয়ে ফেললাম। এ বছরের পুজোটা তাই আমার জীবনভরের সুখের স্মৃতি হয়ে থাকবে।
জলপাইগুড়িতে তো দুর্গা পুজো বড় করে হত না। তাই আমার কাছে দুর্গা পুজো মানে কলকাতা। আমি একটু ঘরকুনো। এই দিনগুলোয় খুব একটা বেরোতে ভাল লাগত না। শুধু অঞ্জলি দিতেই মণ্ডপে যেতাম।জলপাইগুড়িতে পুজোর সময়ে মেলা বসত। মেলায় যেতাম ক্যাপ আর বেলুন ফাটাতে আর পাঁপড় ভাজা খেতে। পুজোয় গোটা পরিবার একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া, বোনেরা মিলে অন্তাক্ষ্যরী। জমে যেত উৎসব।আর একটা কারণেও ছোটবেলায় দুর্গা পুজোর অপেক্ষায় থাকতাম। পুজোর চার দিন শাসনের ঘেরাটোপ থাকত না। ওই চারটে দিন আমরা স্বাধীন। জলপাইগুড়িতে নবমীর দিন রাবণ পোড়ানো হত। সবাই মিলে সেই রাবণ পোড়ানো দেখে তার পর ঠাকুর দেখতে যেতাম। পুজো এলেই জলপাইগুড়ির সেই নবমীর দিনগুলো খুব মনে পড়ে।
এখন পুজোয় বা়ড়িতে থাকতেই বেশি ভাল লাগে। আমার বাড়িতে পুজো হয়। তাই নিয়েই ব্যস্ত থাকি। বন্ধু-বান্ধবরা আসে , তাদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দিই। পরিবারের সঙ্গেও সময় কাটাই। বেশ মজা করেই পুজো কাটে।
দুর্গা পুজো মানেই শাড়ি। এই সময়ে সাবেক পোশাক পরতেই ভাল লাগে। এবার কোন শাড়ি পরব, মা-ই সব ঠিক করে রেখেছেন। পুজোতে অনেক উপহার পাই। আমার তো উপহার পেতে দারুণ লাগে! উপহার দিতেও ভাল লাগে।
নিজেকে নিয়ে এত ব্যস্ত আর এত খুশি থাকি যে, অন্য কারও সঙ্গ আমাকে সেই আনন্দ দিতে পারে না। ঠিক এই কারণেই হয়তো পুজো বা অন্য সময়ে কারওর প্রেমে পড়া হল না! আমার অন্য কারও মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন বোধ হয়নি। না চাইতেই মা দুর্গা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন। আর কী চাইব? আমার কিছুই চাওয়ার নেই।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।