সুইডেনের হেল্সিংবোর্গে দুর্গাপুজো
ইউরোপের সব চেয়ে বড় পুজো সুইডেনের হেল্সিংবোর্গে দুর্গাপুজো। শরৎ কাল আর বাঙালী। এই নিয়ে মনে হয় একটা মহাকাব্য লিখে ফেলা যায়। আমাদের গল্পটা অবশ্য মহাকাব্য না হলেও একটা রূপকথা বলা যেতেই পারে। আমাদের দক্ষিণ সুইডেনের ক্লাব সম্বন্ধ শুরু হয়েছিল জনা তিরিশেক বাঙালিকে নিয়ে। ২০১৯ সালে। সুইডিশে সম্বন্ধ মানেও কিন্তু যোগাযোগ। তারপর জল গড়িয়ে আজ পুকুর। প্রায় চারশো জনের বিরাট সংসার সম্বন্ধের।
সদস্যরা সারা বছরই কিছু না কিছু করেন। সব কটিই কিন্তু বেশ জমকালো। আজকে সম্বন্ধ এতটাই চর্চিত যে সেই ক্লাবের জন্য আলাদা করে বার্তা পাঠিয়েছেন আমাদের সুইডেনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। এত কিছু হচ্ছে আর দুর্গাপুজো হবে না? ২০১৭ সালে আমরা প্রথম দুর্গাপুজো করি। এই বছর আমরা ঠিক করি নিজেদের আয়োজনে মায়ের আরাধনা করব। ব্যাস সবাই মিলে প্ল্যান হয়ে গেল। পয়লা আর দোসরা অক্টোবর, অর্থাৎ শনি, রবি দুইদিন পুজো।
আমাদের দুর্গা ঠাকুর পাঁচ চালা। আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মধ্যম গ্রাম থেকে। এত দূর থেকে মা আসছেন। কম কষ্ট? তাই তো মাকে উজ্জীবিত করতে আমরা নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। সব চেয়ে বড় চমক হল এই বার একজন বলিউডের বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী আসছেন। হেমন্ত ব্রিজওয়াসি। আমাদের ছোট্ট হেল্সিংবোর্গ তৈরি তাকে অভ্যর্থনা জানাতে।
অনুষ্ঠানের পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া মাছ-মিষ্টি এই সব তো আছেই। আসলে বাঙালির প্রাণের উৎসবে যেন কোনও খামতি না থাকে। সঙ্গে কিন্তু আমাদেরও কিছু গান নাচ ইত্যাদি থাকবে। হ্যাঁ, কাজের ফাঁকে ফাঁকে এগুলোও করে থাকি আমরা। পুজো মাত্র দু'দিনের আর তার মধ্যেই সবটুকু সারতে হবে। রবিবারের রাতে থাকছে নানা ধরনের খাবারের মেলা। আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি কিছু বিখ্যাত স্থানীয় হোটেলকে। মানুষ কিন্তু বেশ সাড়া দিচ্ছেন।
আমরা ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। লোক সংখ্যা সীমিত রাখতে হবে এটা একটা অলিখিত শর্ত। বাধ্যবাধকতা তো থাকবেই কিন্তু তার মধ্যেই আমরা আমাদের প্রাণের উৎসবে বাঁধন হারা আনন্দে ভেসে যাব। এই উৎসব সবার। সুইডিশরাও থাকবেন আমাদের সঙ্গে। তার সঙ্গে থাকবেন ভারতের প্রতিটি প্রদেশের মানুষ। কোভিডের পরে বাঙালির প্রাণের উৎসবে মিশে যাবে তামাম দুনিয়া। তার পর? আবার অপেক্ষা..
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।