শরতের প্রাক্কালে বাঙালির মন ও হৃদয় জুড়ে শুরু হয় উৎসব। বলা বাহুল্য, মা দুর্গার আগমন ঘিরে নানা প্রস্তুতি চলতে থাকে। তবে পুজোর সময়ে যদি দেশেই না থাকা যায়, তা হলে?
দুর্গাপুজো নিয়ে বাঙালির আবেগের শেষ নেই। মনে হয় যেন এই চারটে দিনের দিকে তাকিয়েই বছরের ৩৬০ দিন বাঁচা।
সুদূর জার্মানিতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করে সেই ঘাটতি পূরণ করেছে এরলাঙ্গেনের দুর্গাভিল। শহরের কোণে একটি ছোট্ট হল রাতারাতি পুজোর মণ্ডপ হয়ে উঠেছিল গত বছর। এ বছরও তারই প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।
পুজো-আচ্চা, মায়ের ভোগ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন মজার খেলা ও প্রতিযোগিতা- সব মিলিয়ে একেবারে জমজমাট। দুর্গাভিলের পুজো সকলের জন্য উন্মুক্ত এবং কোনও প্রবেশমূল্য নেই।
কাঠামো পুজো থেকে চক্ষুদান, মহালয়া, প্রতিমার সাবেক সাজ- দুর্গাভিলের পুজোর আয়োজনে সবেতেই ঐতিহ্যের ছোঁয়া। পুজো হয় বিশুদ্ধ ভাবে।
উদ্যোক্তা তিনটি বাঙালি পরিবার এবং ছাত্রছাত্রীরা। যথাসম্ভব কলকাতার পুজোর আমেজ তৈরি করার চেষ্টা করেন সকলে মিলে। মেতে ওঠেন পুজোর আনন্দে।
হাজার মাইলের দূরত্ব। কিন্তু দুর্গাপুজোর আয়োজনে কোনও ফাঁক নেই। দেখে মনে হবে ঠিক যেন বাংলার কোনও পুজো।
সাবেক ধাঁচের একচালার প্রতিমা। তবে বিশেষত্ব হল, সুদূর ইউরোপে কাঠামো তৈরি করে মায়ের মূর্তি নিজেরাই তৈরি করেন উদ্যোক্তারা। অরিগ্যামি দিয়ে মণ্ডপসজ্জা হচ্ছে এ বছর।
ষষ্ঠী থেকে দশমী, এই পাঁচ দিনই খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয় দর্শনার্থীদের জন্য। মায়ের ভোগ হিসাবে থাকে খিচুড়ি, লাবড়া, পোলাও, আলুর দম, লুচি, ছোলার ডাল, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি ইত্যাদি।
এক সদস্যের কথায়, “কলকাতায় আমরা এ ভাবেই পুজো কাটাই। তা হলে এরলাঙ্গেনে অন্য রকম হবে কেন?”
দুর্গাভিলের একটাই উদ্দেশ্য- 'এই পুজো সবার।' প্রত্যেক সদস্যই এখানে সংগঠকের ভূমিকায়। প্রত্যেকের নিজস্ব যোগদান ও অবদান রয়েছে।
সুদূর ইউরোপ থেকেই বাংলার মানুষকে শারদ শুভেচ্ছা জানিয়েছে দুর্গাভিল। তাঁদের প্রার্থনা, সবার পুজো ভাল কাটুক, আনন্দে কাটুক।