মাইথন জলাধার। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
খরিফ শস্য চাষের জন্য বৃহস্পতিবার থেকে সেচের জল ছাড়তে শুরু করেছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। বুধবার বিকেলে এ নিয়ে বৈঠক করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেটরি কমিটি (ডিভিআরআরসি)। এ দিন থেকেই মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে।
এ বার প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টি অনেক কম হয়েছে। ফলে, খরিফ মরসুমে চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থায় সেচ দফতর ডিভিসি-র কাছে বারবার জল ছাড়ার আবেদন জানাচ্ছিল। ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ ও কৃষি দফতরের সঙ্গে ডিভিসি ও ডিভিআরআরসি কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়।
ডিভিসির জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় প্রিয়দর্শী বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকেই জল ছাড়া শুরু হয়েছে। আপাতত ছ’দিন লাগাতার জল ছাড়া হবে। পরে প্রয়োজন হলে ফের এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।” ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পাঞ্চেত থেকে ১,২০০ ও মাইথন থেকে চার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঞ্চেত থেকে ৪,৩০০ এবং মাইথন থেকে তিন হাজার কিউসেক জল ছাড়া হবে। সঞ্জয় আরও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে মাইথন জলাধারে জলস্তর ৪৫১ ও পাঞ্চেতের ৪০০.৩৬ ফুট। এই দুই জলাধারের নিরাপদ জলস্তর যথাক্রমে ৪৯৫ ও ৪৩৫ ফুট।
এ দিকে, কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিভিসির জল ছাড়ার সিদ্ধান্তে সব থেকে উপকৃত হবে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও বাঁকুড়া। তুলনামূলক ভাবে কম লাভবান হবে পশ্চিম বর্ধমান জেলা। কারণ, কাঁকসা ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ছাড়া জেলার আর কোনও ব্লকেই সেচখাল নেই। পশ্চিম বর্ধমানের সহ-কৃষি অধিকর্তা উৎপল মণ্ডল বলেন, “পশ্চিম বর্ধমানে চাষাবাদ মূলত বৃষ্টি নির্ভর। তবে অগস্টে টানা ২০ দিন পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে, ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান ফলানো যাবে।” সালানপুর ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “বীজতলা করে রাখা হয়েছে। কিন্তু জমিতে জল নেই, তাই ধান রোয়া যাচ্ছে না। অগস্টে ধারাবাহিক ভাবে কমপক্ষে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ধান রোয়া সম্ভব।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ ভাবে এই জেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান ফলানো হয়। কিন্তু এ বার বৃষ্টিপাত মোটেও আশানুরূপ নয়। সাধারণত জেলায় প্রতি বছর এক হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি দরকার। এ বার প্রায় ২৪ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। তবুও গত বারের তুলনায় এ বার পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূল হওয়ায় প্রায় হাজার হেক্টর জমিতে ধানের ফলন হবে।