লকডাউনে আমিও ছিলাম। আমার মেয়েদের যেমন সঙ্গ দিয়েছি, প্রচুর সময় কাটিয়েছি তেমনই ‘বাডি’ও একই সঙ্গে আমার সঙ্গে অনেকটা সময় উপভোগ করতে পেরেছে। নিয়মিত চেষ্টা করতাম ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতে। ও খুব উত্তেজিত হত। কারণ আমাকে এমন ভাবে ও কখনও বাড়িতে পায়নি। খেলাধুলো, আনন্দ তো ছিলই সঙ্গে ওর কিছু ছোটখাট দেখভালও করেছি। তবে সৎ ভাবে বলতে গেলে আমার স্ত্রী এবং মেয়েরাই ওর যত্নআত্তি করে সে লকডাউন হোক বা অন্য কোনও সময়।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়
আমার চারটে পোষ্যন। আমি ছোট্ট থেকেই খুব কুকুর ভালবাসি। সারমেয়প্রেমী বলতে পারেন। আগে দু’টো কুকুর ছিল। এখন চার। ছোটবেলায় মা-বাবা দু’জনেই চাকরি করতেন। মা তো একদম কুকুর পুষতে চাইত না। বাবা একবার একটা পমেরেনিয়ান এনে দিয়েছিল। ও চলে যাওয়ার পর আর কুকুর পোষা হয়নি। পরে যখন নিজে উপার্জন শুরু করি তখন অবার নিয়ে আসি।
প্রথমে দুই তারপর ক্রমে চার হয়। আমার কুকুরদের নাম সিরাজ, টিকি, ফেনি আর কালহুয়া। ওরা গোল্ডেন রিট্রিভার, পুডল, পাগ আর চাউ চাউ প্রজাতির। অতিমারি সত্যিা আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে কিন্তু কিছু ভালও করেছে। আমাদের জীবনে সবই ছিল শুধু সময়টা একদম ছিল না কারওর। পরিবার হোক বা পোষ্যর কারও সঙ্গে সময় কাটাতে পারিনি। করোনাকাল সেই সময়টা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। গোটা লকডাউনে আমি আমার টালিগঞ্জের বাড়িতে আটকে পড়েছিলাম।
বাবা-মা লেকটাউনের বাড়িতে ছিল। আমিও যেতে পারিনি, ওরাও আসতে পারেনি। আমার এই চার পোষ্যত ছিল এই সময় আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী। ওদের দেখাশোনা করার লোক আছে, কিন্তু এই সময়টা আমি নিজে ওদের দেখাশোনা করেছি। আর ওরা আমাকে। এত বছরে কখনও ওরা আমাকে এই ভাবে পায়নি, তাই ভীষণ আহ্লাদে থাকত। বাইরে নিয়ে বেরিয়েছি। বাড়ির সামনে নিয়ে ঘুরিয়েছি। ওদের খাওয়া-দাওয়ার খেয়াল রেখেছি। সময় কখন কেটে গেছে বুঝিনি।