Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

বাংলা থেকে তৃতীয় মোদী সরকারে মন্ত্রী কারা? অঙ্ক কষে চার নাম নিয়ে জোর জল্পনা রাজ্য বিজেপিতে

রাজ্য থেকে প্রথম মোদী মন্ত্রিসভায় দু’জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দ্বিতীয় বার প্রথম বারের দু’জন থাকলেও পরে বদলে নতুন চার জনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। এ বার মন্ত্রিত্ব বিলি তত সহজ নয়। তবুও চলছে নানা জল্পনা।

এখনও চূড়ান্ত নয় বাংলার কারা জায়গা পাবেন তৃতীয় মোদী মন্ত্রিসভায়।

এখনও চূড়ান্ত নয় বাংলার কারা জায়গা পাবেন তৃতীয় মোদী মন্ত্রিসভায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৪ ১৭:৩৮
Share: Save:

বাংলা থেকে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা মাত্র ১২। তবে তার থেকেও এক বা দু’জন মন্ত্রী হতে পারেন। যদিও কাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নানা অঙ্ক কষে কয়েকটি নাম নিয়ে জোর আলোচনা চলছে পদ্মশিবিরের অন্দরে। এর মধ্যে আবার চার জনের ‘সম্ভাবনা’ বেশি বলেও দাবি করা হচ্ছে।

২০১৪ সালে বিজেপির টিকিটে রাজ্য থেকে সাংসদ হয়েছিলেন দু’জন। দার্জিলিঙে জিতেছিলেন সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এবং আসানসোল থেকে বাবুল সুপ্রিয়। দু’জনকেই প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর পরে ২০১৯ সালে রাজ্যে ফল আগের চেয়ে ভাল হলেও মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়েনি। সে বার ১৮ জন জিতেছিলেন। তাঁদের থেকে বাবুলকে আবার মন্ত্রী করা হয়। তবে সে বারেও প্রতিমন্ত্রীই। প্রতিমন্ত্রী করা হয় রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে। বাবুল এখন তৃণমূলে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী। আর দেবশ্রী কলকাতা দক্ষিণ আসনে সদ্য-পরাজিত।

বাবুল ও দেবশ্রী অবশ্য পুরো মেয়াদ কেন্দ্রে মন্ত্রী থাকতে পারেননি। ২০২১ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলে ওই দু’জনকে সরিয়ে বাংলা থেকে নতুন চার জনকে মন্ত্রী করা হয়। সেই চার সাংসদ হলেন আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা, কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক, বাঁকুড়ার সুভাষ সরকার এবং বনগাঁর শান্তনু ঠাকুর। এ বার বার্লাকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। নিশীথ এবং সুভাষ জিততে পারেননি। অতীতে মন্ত্রী হওয়া অহলুওয়ালিয়াও আসানসোল কেন্দ্রে পরাজিত। ফলে বাংলা থেকে আগে মন্ত্রী থাকা একমাত্র শান্তনুই রয়েছেন।

দেশ: ৫৪৩৫৪৩

সংখ্যাগরিষ্ঠতা: ২৭২

  • দল
  • আসন
বিজেপি ২৪০
কংগ্রেস ৯৯
এসপি ৩৭
তৃণমূল ২৯
ডিএমকে ২২
টিডিপি ১৬
জেডিইউ ১২
শিবসেনা(উদ্ধব)
শিবসেনা(শিন্ডে)
এনসিপি(শরদ)
এলজেপি
ওয়াইএসআরসিপি
সিপিআইএম
আরজেডি
আপ
জেএমএম
আইইউএমএল
জেডিএস
জেকেএন
সিপিআই
আরএলডি
জেএনপি
সিপিআইএমএল
ভিসিকে
এজিপি
কেসি(এম)
আরএসপি
এনসিপি(অজিত)
ভিওটিপিপি
জ়েডপিএম
অকালি দল
আরএলটিপি
এসকেএম
এমডিএমকে
এএসপিকেআর
এআইএমআইএম
ইউপিপিএল
আপনা দল
এজেএসইউপি
ভারতএপি
এইচএএম (এস)
নির্দল

গত বার অঙ্ক কষেই চার জনকে মন্ত্রী করেছিল বিজেপি। বার্লা মূলত উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি হিসাবেই মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে খ্রিস্টান হিসাবে তিনি সংখ্যালঘুও বটে। আর নিশীথকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয় রাজবংশী সমাজকে খুশি করতে। জঙ্গলমহলের প্রতিনিধি হিসাবে ছাড়াও বিজেপির ‘আদি’ নেতা হিসাবে মন্ত্রিত্ব পান সুভাষ। আর শান্তনু মতুয়া সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে।

বিজেপির অন্দরের জল্পনা বলছে, এ বার বাংলা থেকে দু’জনকে মন্ত্রী করার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকে তিন জনের কথা বললেও সে সম্ভাবনা কম। তবে বিজেপির রাজ্য নেতারা মনে করছেন, শান্তনুকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হবে না। কারণ, এই নির্বাচনে ফল খারাপ হলেও মতুয়া ভোট বিজেপির ঝুলিতে রয়েছে। এ বার উত্তরবঙ্গের কাউকে মন্ত্রী করা হবে কি না, তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে বিজেপির জেতা ১২টি আসনের মধ্যে উত্তরবঙ্গে ছ’টি এবং দক্ষিণবঙ্গে ছ’টি। উত্তরবঙ্গের কাউকে মন্ত্রী করার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আলিপুরদুয়ারের মনোজ টিগ্গা। মাদারিহাটের বিধায়ক রাজ্য বিধানসভায় মুখ্য সচেতক মনোজ বিজেপির পুরনো দিনের নেতা। আবার জলপাইগুড়ির চিকিৎসক সাংসদ জয়ন্তকুমার রায়ও রয়েছেন লড়াইয়ে। তফসিলি ভোট ধরে রাখার অঙ্কেই তাঁকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে কেউ কেউ এমনও বলছেন যে, এ বারে বালুরঘাট-জয়ী সুকান্ত মজুমদারকে পূর্ণমন্ত্রী করে রাজ্য সভাপতি পদে বদল আনা হতে পারে। তবে সে সম্ভাবনাও কম । কারণ, বিপর্যয়ের পরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ নিয়ে দলের যা হাল, তাতে সাংগঠনিক রদবদল হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

দক্ষিণবঙ্গ থেকে শান্তনুকে মন্ত্রী রাখার পরেও আরও এক জনকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা প্রবল। তিনি তমলুক থেকে জয়ী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথম বার রাজনীতিতে আগতদের মধ্যে অভিজিৎ ছিলেন বিজেপির ‘ভিআইপি’ প্রার্থী। তাঁকে মন্ত্রী করার সম্ভাবনা থাকলেও দ্বিতীয় বার বিষ্ণুপুর থেকে জয়ী সৌমিত্র খাঁকে মন্ত্রী করার দাবিও উঠছে দলের ভিতরে। অনেকেই বলছেন, সৌমিত্র ভোটে জেতার পরে যে ভাবে রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিয়ে নীরব থেকেছেন, তাতে তিনি একদিকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ‘বার্তা পাঠাচ্ছেন। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের প্রশংসা করে দলের উপর ‘চাপ’ও বজায় রেখেছেন। তবে ২০১৯ সালে জেতার পরে যত বার মোদী মন্ত্রিসভায় রদবদল হয়েছে, তত বারই মন্ত্রিত্বের দাবিদার ছিলেন সৌমিত্র। নানা ভাবে সে বার্তাও তিনি দলকে দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। এ বার জঙ্গলমহলে আগের তুলনায় বিজেপির ফলাফল ‘করুণ’। তাতে কি সৌমিত্রের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে? যদিও অনেকে বলছেন, পুরুলিয়ার জ্যোতির্ময় মাহাতোকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে সৌমিত্রকে সাংগঠনিক দায়িত্বে ফেরানো হতে পারে।

আরও নানা নাম উঠছে মন্ত্রিত্বের প্রশ্নে। তবে সবচেয়ে বেশি জল্পনা মনোজ, জয়ন্তকুমার, শান্তনু এবং অভিজিৎকে নিয়েই। এই প্রথম বার মোদী সরকার গড়বেন জোট রাজনীতির ‘বাধ্যবাধকতা’ মেনে। চাইলেও নিজের দলের সাংসদদের তিনি বেশি বাছতে পারবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Narendra Modi Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE