নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা। — নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচন কমিশনকে তাদের ক্ষমতা এবং দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। শুক্রবার দিল্লিতে কমিশনের দফতরে গিয়ে তারা জানিয়েছে, লোকসভা ভোটের মুখে যে ভাবে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে গ্রেফতার করানো হয়েছে, তা ভোটের ময়দানে সমতা রক্ষার পরিপন্থী। বিরোধীরা জানিয়েছেন, ভোট ঘোষণার পর যে হেতু কমিশনের হাতেই এই সমতা বজায় রাখার দায়িত্ব, তাই কমিশনের উচিত এ ক্ষেত্রেও নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই ধরনের পক্ষপাতমূলক ঘটনা রুখে দেওয়া। এ ব্যাপারে কমিশনের কী কী করা উচিত সে সংক্রান্ত ১১টি পরামর্শও কমিশনকে জানিয়ে এসেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার রাতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল, তারও আগে গ্রেফতার হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসকদলের প্রধান হেমন্ত সোরেন, বাংলার শাসকদলের মন্ত্রীর বাড়িতে ইডি তল্লাশি চলছে, অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসেরও। বিরোধীদের দাবি, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলি। অথচ কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির একজনও নেতাকে গ্রেফতার করেনি তারা। ইডি বা সিবিআই তল্লাশি চালানো হয়নি কোনও বিজেপি নেতা, সাংসদ বা বিধায়কের বাড়িতে! এর থেকেই বোঝা যায় কতটা পক্ষপাতদুষ্ট কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এই সরকার। নির্বাচন কমিশনকে এই ব্যাপারেই ১১টি পরামর্শ দিয়েছে তারা।
১) কমিশনের উচিত ভোটের ময়দানে সমস্ত রাজনৈতিক দলের জন্য একই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। যাতে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো আক্রান্ত না হয়।
২) সংবিধানের সংশোধনীকেও অসাংবিধানিক হিসাবে ঘোষণা করার ক্ষমতা আছে কমিশনের।
৩) সরকারি ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করেছে এই সরকার।
৪) স্বাধীনতার পর গত ৭৫ বছরে যা যা কখনও ঘটেনি, তাই হয়েছে। এই প্রথম কোনও ক্ষমতায় উপবিষ্ট মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার কার্যনির্বাহী সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় তিন বার পরিবর্তন করা হয়েছে বাংলার পুলিশের ডিজি-কে।
৫) আর এই সবই হয়েছে অ-বিজেপি দলগুলির সঙ্গে। কেন কোনও শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি? তার কারণ, ১০০ শতাংশ পক্ষপাতদুষ্ট দল।
৬) নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাই কমিশনের উচিত শাসকদলের এই ধরনের অত্যাচার থেকে বিরোধী দলগুলিকে রক্ষা করা।
৭) গ্রেফতার করার ক্ষমতা আছে মানে এই নয় গ্রেফতার করা জরুরি।
৮) নির্বাচনের সময়টুকু পক্ষপাতহীন, বৈষম্যহীন হওয়া উচিত। এ কথা বলা হয়েছে ২০১৯ সালের নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তিতে। দয়া করে তা কার্যকর করুন।
৯) যদি নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ, সরকারি আধিকারিকদের বদলে দিতে পারে, তবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকদের বদলাচ্ছে না কেন।
১০) সংবিধানের ৩২৪ ধারায় নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত ক্ষমতা দেওয়া আছে। দয়া করে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে ইডি, সিবিআই, আয়কর বিভাগের পদক্ষেপে রাশ টানুন। অন্তত যতদিন না নির্বাচন শেষ হচ্ছে।
১১) আমরা এখানে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধি হয়ে এসেছি। অনেক ক্ষেত্রেই হয়তো দেখবেন নিজেদের রাজ্যে আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলছি। কিন্তু এখানে আমরা এসেছি গণতন্ত্রের হয়ে কথা বলতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy