মুরারইয়ে দেওয়াল লিখতে ব্যস্ত লিপিকা। —নিজস্ব চিত্র।
সারা বছর তাঁদের খোঁজ পড়ে না। কাজও থাকে না তেমন। তবে ভোট এলেই তাঁদের ডাক পড়ে। যেমন পড়েছে এখন। লোকসভা ভোটের আগে যেন খাবার সময়ও পাচ্ছেন না লিপিকার বা দেওয়াল লেখকেরা।
ভোট এগিয়ে আসতেই বীরভূমের নানা জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে দেওয়াল লিখন। আর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সেই সব দেওয়াল লিখতেই ব্যস্ত লিপিকাররা। রোজগার বেড়ে যাওয়ায় খুশি অনেকেই। লিপিকারদের অনেকে জানালেন, ‘‘বছরের অন্য সময় যেমন সে ভাবে কাজই পাই না, সে দিকে এখন ভোটের সময় কাজ শেষ করার সময় পাচ্ছি না।’’
লিপিকাররা জানালেন, আগে দোকানের নাম বা অন্য নানা নাম লেখার কাজের ভাল চাহিদা ছিল। এখন ফেক্স ও বোর্ডের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কাজ কমেছে লিপিকারদের। বাধ্য হয়েই অনেকে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন।নলহাটির লিপিকার অনুপ লেট বললেন, ‘‘দেওয়াল লিখতেও অভিজ্ঞতা ও ভাল লেখার কৌশল জানতে হয়। ভোটের আগে চাহিদা বেড়ে আমাদের।’’
বেড়েছে আয়ও। লিপিকাররা জানালেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দেওয়াল লেখার জন্য দিনে হাজার টাকার বেশি পারিশ্রমিক দিচ্ছে। আবার অনেক রাজনৈতিক দল একটি দেওয়াল লিখলে একশো টাকা পর্যন্ত দিচ্ছে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা। দিনে পনেরো কুড়িটা দেওয়াল লিখলে ভাল উপার্জন হচ্ছে তাঁদের। নলহাটির বাসিন্দা পার্থ কোনাই বলছেন, ‘‘অভাবের সংসারে ভোটের সময় ভাল উপার্জন হয়। এই দেওয়াল লিখে অন্য সময় মাসে পাঁচ হাজার টাকাও হয় না। ভোটের মাসে উপার্জন ভাল হওয়ায় আর্থিক সমস্যা অনেক কমে যায়। পারিবারিক কারণে যে ধার করতে হয় তা শোধ করা যায়।’’ ফ্লেক্স, হোর্ডিংয়ের রমরমার যুগে যে ভাল লিপিকারদের সংখ্যা কমেছে তা মানছে তৃণমূল বিজেপি দু’পক্ষই। তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ। তিনি বলেন, “দেওয়াল লিখনের জন্য লিপিকার পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের চাহিদা বেড়েছে। বাধ্য হয়ে দলের কর্মীরা দেওয়াল লিখছেন। তবে দশ জন লিপিকার বিভিন্ন এলাকায় দেওয়াল লিখছেন।” বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক ঝলক মণ্ডল বলেন, “চাহিদা অনুযায়ী লিপিকারদের পাওয়া যাচ্ছে না। রামপুরহাট ও মুর্শিদাবাদ থেকেও লিপিকারদের নিয়ে এসে দেওয়াল লিখনের কাজ চলছে।”
ভোটের চাহিদার জন্য পেশায় ফিরেছেন অন্য পেশায় চলে যাওয়া লিপিকারেরাও। পাইকরের লিপিকার সেলিম শেখ বলেন, ‘‘ছোট থেকেই ছবি আঁকতে ভাল লাগত। সেই ভালবাসা থেকে এই পেশায় আসা।’’ তিনি জানান, আগে এই পেশায় ভাল উপার্জন হলেও এখন রোজগার হয় না। তাই বাধ্য হয়ে চায়ের দোকান করেছেন তিনি। তবে ভোটের সময় দোকান বন্ধ করে দেওয়াল লেখার কাজ করছেন সেলিম। তিনি বলছেন, ‘‘এই দু’মাস দ্বিগুণ রোজগার হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy