বিক্ষোভরত সাংসদদের কমিশনের সামনে থেকে সরিয়ে দিল দিল্লি পুলিশ। ছবি ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সোমবারই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দল। কমিশনের কাছে নিজেদের অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে বাইরে এসে ধর্নায় বসে পড়ে তারা। ২৪ ঘণ্টা ধর্নায় বসার ঘোষণা করেন তৃণমূল সাংসদেরা। কিন্তু কয়েক মিনিট পরেই সেই ধর্না তুলে দিতে আসরে নামে দিল্লি পুলিশ। প্রথমে পুলিশ তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কমিশনের সামনে থেকে সরে যেতে বলে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার আগে তারা ধর্না তুলবে না, এমন দাবিতেই অটল থাকে তৃণমূল প্রতিনিধি দল। তার পরই ধর্না তুলতে শুরু করে পুলিশ। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। একে একে বিক্ষোভরত তৃণমূল সাংসদদের টেনেহিঁচড়ে বাসে তোলে পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভূপতিনগরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র ভূমিকা নিয়ে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে সোমবারই নির্বাচন কমিশনের দেখা করতে চেয়ে সময় চেয়েছিল তৃণমূল। বিকেল ৪টের সময় পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলকে সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক কমিশনের দফতরে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্ত, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং সুদীপ রাহা।
কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সাংসদ দোলা জানান, তাঁরা মু্খ্য কমিশনার এবং দুই কমিশনারের কাছে মূলত দুটি দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চাই, সমান মাঠে খেলার ব্যবস্থা করুক। বিজেপির জমিদারি যেন বন্ধ হয়। দাবি করেছি, এখনই চার সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক। যাতে বিজেপি ওঁদের খেলার যন্ত্র ভাবতে না পারে।’’ তৃণমূলের দাবি, ইডি, সিবিআই, এনআইএ, আয়কর দফতরের প্রধানদের সরিয়ে দেওয়া হোক। এই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্র নিজের কাজে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ এনেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
শুধু তা-ই নয়, তৃণমূল অভিযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। দোলা বলেন, ‘‘বিজেপির তিওয়ারি এবং এনআইএর মধ্যে কী ভাব-ভালবাসা হল জানি না। তার ফল, ২০২২ সালের ঘটনায় ২০২৪ সালে ভোটের আগে এনআইএ গ্রেফতার করল। তা-ও রাত সাড়ে তিনটের সময় এসে। মেয়েদের হেনস্থা করল।’’
এই বিষয়ে স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তা-ও জানিয়েছেন দোলা। তাঁর কথায়, ‘‘এনআইএ স্থানীয় পুলিশকে জানিয়েছে ভোর সাড়ে ৫টা। সকলে জানেন, আইনশৃঙ্খলার বিষয় রাজ্যের অধীনে। নির্বাচনী আচরণবিধি জারি। তবু স্থানীয় থানা তো জানবে! সন্দেশখালির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, গত বছর কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে কৃষি ভবনে ধর্নায় বসেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ে নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। তৃণমূল নেতাদের কাঁধে ছিল বাংলার মানুষের নিজেদের দাবি জানিয়ে লেখা চিঠি। কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রজ্ঞা নিরঞ্জনের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তাদের। সেই মতো মন্ত্রীর দফতরের সামনে প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়ে দেন দেখা করতে পারছেন না। যদিও অভিষেক জানান, তাঁরা দেখা না করে যাবেন না। বাংলার মানুষের দাবিদাওয়া তাঁরা তুলে ধরবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেষ পর্যন্ত দেখা না করেই বেরিয়ে যান সেখান থেকে। এর পরেই পুলিশ এসে তুলে দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। সোমবারের ঘটনার সঙ্গে অনেকে সেই পুরনো ঘটনার তুলনা টানছেন।
বিক্ষোভরত তৃণমূলের প্রতিনিধি দলে থাকা সাকেত এক্স (সাবেক টুইটারে) পোস্ট করে লেখেন, ‘‘দিল্লি পুলিশ আমাদের অপহরণ করেছে। আমরা কমিশনের সামনে প্রতিবাদ জানিয়ে বসেছিলাম। আমাদের সেখান থেকে তুলে দেওয়া হয়। বলা হয় মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। তার পর দেখি আমাদের বাস ঘুরিয়ে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’ সোমবারের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে কমিশনকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy