—প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া উষ্মা যাতে ভোটবাক্সে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র সূত্র মেনে কংগ্রেসের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে আসন রফার প্রশ্নে নেতিবাচক মনোভাব নেওয়ার পিছনে এটিকে অন্যতম বড় কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দলের এক শীর্ষ নেতার দাবি, “এই বিষয়টিকে হিসাবের মধ্যে ধরে সুচিন্তিত পদক্ষেপ করা হয়েছে।” পাশাপাশি রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, গত বছর সেপ্টেম্বরে ধুপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনটিকে মডেল হিসেবে সামনে রেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে ত্রিমুখী লড়াইয়ে একা লড়ে বিজেপি এবং সিপিএম জোটকে হারিয়ে জিতেছিল তৃণমূল।
অন্য দিকে, আজ কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, এটি চিন্তার বিষয় ঠিকই, যে পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী জোট হলে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া উষ্মা পুরোপুরি বিজেপি-তে চলে যাতে পারে। কিন্তু অন্য একটি বিষয় তাদের হিসাবের মধ্যে ছিল যে কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংখ্যালঘু ভোট টুকরো না হয়ে এককাট্টা থাকবে।
কংগ্রেসের দাবি, মমতা নিজেও জানেন যে এ বারের নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট সম্পূর্ণ ভাবে তাঁর পাশে নেই। কিছু অংশ সিপিএম এবং কংগ্রেসের দিকে চলে যেতে পারে। এই অঙ্ক কষেই ডিসেম্বরে রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা রাজ্যে ন’টি আসনে তৃণমূলের থেকে সমর্থন চাওয়ার কথা বলেছিলেন। এই ন’টির মধ্যে দু’টিতে কংগ্রেস যথেষ্ট ভোট পেয়ে জিতেছিল। আর বাকি সাতটিতে কংগ্রেস যথেষ্ট ভোট পেয়েছিল বলে তৃণমূল হেরে যায়। কংগ্রেস শিবির বলছে, এ বারে রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট না হওয়ায় তৃতীয় শক্তি হিসাবে একত্রে লড়বে বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ। ডায়মন্ডহারবার-সহ দক্ষিণ বঙ্গের কিছু আসনে আইএসএফ-এর প্রার্থীরা নিজে লড়বেন। ফলে সংখ্যালঘু ভোট কিছুটা হলেও ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
যদিও রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সংখ্যালঘু ভোটভিত্তি নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু সন্দেশখালি কাণ্ড এবং সাম্প্রতিক অতীতে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে অসন্তোষ যদি তৃণমূল-বিরোধী একাধিক বাক্সে ছড়িয়ে যায়, তা হলে লাভ ঘাসফুলের। উদাহরণ হিসেবে ধুপগুড়ি উপ-নির্বাচনে দলের জয়কে সামনে আনছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়কে ৪,০০০-র বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়। বাম-কংগ্রেস জোট ভেসে গেলেও
তৃণমূল-বিরোধী ভোট কেটে বিজেপি-কে হারিয়ে দিয়েছিল সে দিন। তৃণমূল পায় ৪৬ শতাংশ এবং বিজেপি পায় ৪৪ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ ফারাক গড়ে দেয় মাত্র ২ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থী পেয়েছিলেন সাড়ে ছ’শতাংশ ভোট। অর্থাৎ তৃণমূল বিরোধী ভোট পড়েছিল পঞ্চাশ শতাংশের বেশি। সে দিন ওই ভোট ভাগ হয়ে সুবিধা করে দিয়েছিল মমতার দলকে।
আজ কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে আসন রফার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা পুরোপুরি বন্ধ। এই নিয়ে কোনও প্রস্তাবও সামনে নেই। তা সত্ত্বেও কংগ্রেসের দিক থেকে এখনও ইতিবাচক বার্তা পাঠানো হচ্ছে বলে খবর। চেষ্টা চলছে যদি মধ্যবর্তী কোনও পথ বের করা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy